খাগড়াছড়িতে প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত ৬
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার স্বনির্ভর এলাকায় প্রতিপক্ষের গুলিতে ৬ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) খাগড়াছড়ি জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তপন চাকমা, যুগ্ম-সম্পাদক এলটন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ-সভাপতি পলাশ চাকমা, উত্তর খবংপয্যা গ্রামের বাসিন্দা কান্দারা চাকমার ছেলে রূপম চাকমা, মহালছড়ি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্য সহকারী জীতায়ন চাকমা এবং স্বনির্ভর বাজারের চা দোকানি বিধান চাকমা।
এদিকে সোহেল চাকমা, সমর বিকাশ চাকমা ও শখিধন চাকমার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন আধুনিক সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নয়নময় ত্রিপুরা। আহতদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলির চিহ্ন রয়েছে। তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, চাঁদাবাজির প্রতিবাদে শিববাড়ি এলাকার পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই ইউপিডিএফ সমর্থকরা খাগড়াছড়ির স্বনির্ভর বাজার এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। সেখানেই প্রতিপক্ষরা প্রকাশ্যে তাদের ওপর গুলি চালান। এক পর্যায়ে তারা ইউপিডিএফ কার্যালয়ে আশ্রয় নিলে সেখানেও গুলি চালান প্রতিপক্ষ।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারা জীবন বাঁচাতে এদিক-সেদিক ছুটতে থাকেন। এ ঘটনার পরপরই স্বনির্ভর বাজারের সব দোকান-পাট বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে গুলিতে নিহত মহালছড়ি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্য সহকারী জীতায়ন চাকমার স্ত্রী প্রভাতী চাকমা জানান, শনিবার অফিস বন্ধ হওয়ার কারণে সকালে বাজারে নাস্তা করতে যান জীতায়ন। সেখানেই এলোপাতাড়ি গুলিতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
খাগড়াছড়ি সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাহাদাত হোসেন টিটো বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ঘটনার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস-এমএন লারমা) ও ইউপিডিএফকে (গণতান্ত্রিক) দায়ী করেছেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের ইউপিডিএফ প্রচার ও প্রকাশনা সেলের প্রধান নিরন চাকমা।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস-এমএন লারমা) সহ-তথ্য ও প্রচার সম্পাদক প্রশান্ত চাকমা বলেছেন, এটা তাদের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ঘটতে পারে।
এ ঘটনার পর থেকেই খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ ঘটনায় খাগড়াছড়ি শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনী ও বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত এ নিয়ে চলতি বছরে খাগড়াছড়িতে প্রতিপক্ষের হাতে পার্বত্য শান্তিচুক্তিবিরোধী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সমর্থিত ১২ নেতাকর্মীসহ ১৫ জন নিহত হলেন।
মুজিবুর রহমান ভুঁইয়া/এফএ/আরআইপি/এমএস