আড়িয়াল খাঁ নদের তীব্র ভাঙনে আতঙ্ক
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। একাধিকবার সরকারিভাবে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও ভাঙন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভাঙনের মুখে রয়েছে মাদরাসা, স্কুলসহ অসংখ্য বসতভিটা।
উপজেলার চরমানাইর ইউনিয়নে নতুন করে গত এক সপ্তাহ ধরে আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙন ভয়াল রুপ ধারণ করেছে। নদীগর্ভে এ পর্যন্ত বিলীন হয়ে গেছে ৬৫টি বসতভিটে। এছাড়াও ইউনিয়নের ৫শ বিঘা ফসলি জমি ও বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় দুই শতাধিক গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো কেউ আত্মীয়ের বাড়ি, আবার কেউ সরকারি রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে চর বন্দরখোলা মাদরাসা ও চর বন্দর খোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুটি প্রতিষ্ঠানের ভবনের একাংশ রয়েছে নদীর পাড়ে। নদীতে বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে সরিয়ে ফেলা হয়েছে ভবনের মধ্যে থাকা শিক্ষা সামগ্রী। এছাড়াও ভবন থেকে খুলে ফেলা হয়েছে লোহার গ্রিল, দরজা ও জানালা।
চর বন্দরখোলা ফাজিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মাহফুজুল হাসান বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে ভাঙনের তীব্রতা থাকায় দুটি টিনশেড ঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমান অফিস কক্ষের বিল্ডিংয়ের একাংশে ভাঙন ধরেছে। যে কোনো মুহূর্তে পুরো ভবনটি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
চর বন্দরখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নিজাম উদ্দিন আকন বলেন, ভাঙনে স্কুল অত্যান্ত ঝুঁকিতে রয়েছে। নদীর গর্ভে ভবনের একাংশ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপদে অন্যত্র সরিয়ে ক্লাস নেয়া হবে।
চরমানাইর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে দিনরাত ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এরপরও ভাঙন থামছে না। নদী তার গতিতে নিয়মিত ভাঙছে। ভাঙনে ৬৫টি বসতবাড়ি বিলীন হয়েছে।
ভাঙন প্রতিরোধের বিষয়ে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, উপজেলার ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগের ডাম্পিং কাজ চলছে। গত সপ্তাহ ধরে হঠাৎ করে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১৪ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে সদরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আবু এহসান মিয়া বলেন, ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত অর্ধশতাধিক পরিবারকে জেলা প্রশাসনের ত্রাণ তহবিল থেকে সহায়তা করা হয়েছে।
আরএআর/পিআর