তুমি আমাকে চিরদিনের জন্য ভুলে যাও, অতঃপর...

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)
প্রকাশিত: ০৯:২৫ পিএম, ০৬ আগস্ট ২০১৮
ফাইল ছবি

ভৈরবে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে হুমায়ূন (২২) নামের এক প্রেমিক গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। রোববার রাতে ভৈরব শহরের রানীর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মৃত হুমায়ূনের বাবার নাম আ. রশিদ। তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার মধ্য সালুয়া গ্রামে। তাদের পরিবারের সবাই ভৈরব শহরের রানীর বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।

সোমবার সকালে পরিবারের সদস্যরা বাসার ফ্যান থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ বাসায় এসে তার মরদেহ থানায় নিয়ে যায়।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, হুমায়ূনের সঙ্গে দীর্ঘদিন আকলিমা বেগম (ছদ্মনাম) নামের এক মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটি স্থানীয় একটি মাদরাসায় চাকরি করত। ছেলেটি ভৈরব হাজী আসমত কলেজে লেখাপড়া করত।

প্রেমের বিষয়টি পরিবার জানলেও প্রেমিকার সঙ্গে ছেলের বিয়ে দিতে রাজি হয়নি ছেলের বাবা। ফলে ৫ বছর আগে প্রবাসী এক ছেলের সঙ্গে প্রমিকার বিয়ে হয়ে যায়। এরপর থেকে প্রেমিক তার মা-বাবার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া করত।

এদিকে, প্রেমিকার স্বামী প্রবাসে চলে গেলে দুইজনের মধ্যে ফেসবুক ও মোবাইলে যোগাযোগ অব্যাহত থাকে। মাঝেমধ্যে তাদের দেখা হতো। পাশাপাশি ফেসবুকে প্রেমে ব্যর্থতার স্ট্যাটাস দিত ছেলে।

গত ২৭ জুলাই প্রেমিক তার ফেসবুক প্রোফাইলে ফাঁসিতে ঝুলন্ত একটি কার্টুনের ছবি আপলোড দেয়। ছবিটি এখনও তার প্রোফাইলে রয়েছে।

গতকাল রোববার রাতে এ ঘটনা নিয়ে ছেলেটি তার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে। রাতে ছেলেটি তার প্রেমিকাকে মোবাইল ফোনে বলে, তুমি আমার ফোন রিসিভ করো না কেন? ফোন রিসিভ না করলে আমি আত্মহত্যা করব। এমন কথা শুনে প্রেমিকা তার প্রেমিকের মাকে ফোনে বিষয়টি জানালে দুইজনকে বকাঝকা করে মা।

পরে প্রেমিককে ফোন করে প্রেমিকা বলে, তোমার মা আমাকে বকাঝকা করলো কেন? তুমি আমাকে চিরদিনের জন্য ভুলে যাও। প্রেমিক উত্তর দেয়, ভুলে যেতে হলে আমি আজ রাতেই আত্মহত্যা করব। দুইজনের কথা শেষে ছেলেটি তার বাসার রুমের দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করে।

সোমবার বিকেলে প্রেমিকার মোবাইলে কল দিলে বিস্তারিত জানান তিনি। বর্ণনা দেন তাদের ৫ বছরের প্রেম-কাহিনীর। বার বার প্রেমিকের কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রেমিকা।

এ ব্যাপারে জানতে হুমায়ূনের ছোট ভাইয়ের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে সে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি। ফোন দিয়ে তার বাবাকে না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

ভৈরব থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) বাহারুল ইসলাম বাহার বলেন, পুলিশ ঘটনার খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। প্রেমঘটিত ঘটনায় ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আসাদুজ্জামান ফারুক/এএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।