মেহেরপুরে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ১ লাখ পশু

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মেহেরপুর
প্রকাশিত: ০৪:৩৯ পিএম, ০৬ আগস্ট ২০১৮

কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরু পরিচর্যায় ব্যস্ত খামারিরা। প্রাকৃতিক খাদ্য ব্যবহার করে গরু লালনপালন করছেন তারা। তবে গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা চিন্তিত খামারিরা।

এদিকে, গরু মোটাতাজা করতে কোনো অসাধু ব্যবসায়ী যাতে ক্ষতিকারক ওষুধ ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য প্রাণিসম্পদ বিভাগের কঠোর নজরদারির দাবি জানিয়েছেন খামারিরা। সেইসঙ্গে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ১ লাখ পশু।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, ঈদুল আজহা সামনে রেখে মেহেরপুরে চলতি বছরে কোরবানির জন্য ৬১০টি মহিষ, ৩৬ হাজার ৯১৪টি গরু, ২ হাজার ২৮২টি ভেড়া ও ৫৯ হাজার ৪৯০টি ছাগল প্রস্তুত করা হয়েছে। যা গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এখানে গরু খামার ৭৭৬টি, ছাগল খামার ৩৪৯টি এবং ২৫৬টি ভেড়া খামার রয়েছে। মেহেরপুর জেলায় প্রায় ১ লাখ কোরবানির উপযুক্ত পশু রয়েছে। এসব পশু কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য বর্তমানে পরিচর্যায় ব্যস্ত বসতবাড়ি ও খামারের মালিকরা। গত বছর কোরবানির পশুর ভালো দাম পাওয়ায় পশু পালনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এবার গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছুটা ঝুঁকি রয়েছে।

Meherpur-Cow-Farm-2

মেহেরপুর গাংনীর পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের অ্যাবকম ক্যাটেল ফার্মের মালিক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, এবারও আমার খামারে কোরবানির জন্য উপযুক্ত শতাধিক গরু রয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যাপারীরা গরু কিনতে আসছেন। দরদামে পছন্দ না হলে ঢাকার পশু হাটে গরু তুলব।

গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে লোকসানের আশঙ্কা প্রকাশ করে এই খামারি বলেন, ঘাস-খড় ও সুষম খাদ্যের দাম বেড়েছে। গত বছরের চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি দামে এসব গো-খাদ্য কিনতে হচ্ছে।

মেহেরপুর সদর উপজেলার শলিকা গ্রামের খামারি তুহিন মাসুদ জানান, তার খামারে ৪০টি গরু আছে। দেশীয় খাবার বিচালি, চালের কুঁড়া, খৈল, কাচা ঘাস খাইয়ে মোটাতাজা করা হচ্ছে খামারের গরুগুলো। কিন্তু গেল কয়েক মাসে গোখাদ্যের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। কিন্ত সে হারে বাড়েনি গরুর দাম। ঈদকে সামনে রেখে বাজারে ক্রেতাও কম। আবার দু’একজন ক্রেতা আসলেও গরুর দাম বলছেন কম। ফলে গরু বেচতে হিমশিম খেতে হচ্ছে খামারিদের।

Meherpur-Cow-Farm-3

মেহেরপুরের গাংনীর পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের ইটভাটা মালিক ইনামুল হক। এবারও তার খামারে ১৩টি গরু রয়েছে। প্রতিটি গরু এখনই দর উঠছে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত।

ইনামুল হক বলেন, বড় গরু পালন করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। দেশের বিভিন্ন স্থানে ওষুধ দিয়ে গরু মোটাতাজাকরণের বিরূপ প্রভাব পড়ে আমাদের এলাকায়। উপযুক্ত জাতের বাছুর, নির্দিষ্ট পরিমাণ সুষম খাবার ও প্রয়োজনীয় পরিচর্যায় গরু অনেক বড় করা হয়। ক্ষতিকর কোনো ওষুধ ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। খামার রক্ষায় ক্ষতিকর ওষুধের ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রশাসনের আরও কঠোর হতে হবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কোনোভাবেই খামারি যাতে স্টরয়েড জাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করতে না পারে সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। এগুলো প্রতিরোধে বেশ কয়েকটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। কোরবানির জন্য পশু বিক্রি করতে মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন প্রাণিসম্পদ অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। এছাড়াও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে ভারত থেকে অবৈধ পথে গরু আসা ঠেকাতে জেলা প্রশাসন ও বিজিবির সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।

আসিফ ইকবাল/এএম/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।