ঝিনাইদহে কাঁচা মরিচের জমজমাট হাট
ঝিনাইদহের বাজার গোপালপুরে কাঁচা মরিচের জমজমাট হাট বসেছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পাইকারি কেনাবেচা চলে এ হাটে। এখান থেকে পাইকারি ব্যাপারীরা প্রতিদিন ৭-৮ ট্রাক কাঁচা মরিচ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকেন।
সরেজমিনে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের বাজার গোপালপুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, বাজারটিতে কাঁচা মরিচের বিশাল জমজমাট হাট বসেছে। মাত্র কয়েক বছর হলো বাজার গোপালপুর সাধারণ হাটে কাঁচা মরিচের হাট বসছে। এরইমধ্যে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে কাঁচা মরিচের বিশাল এ হাটের খবর।
কথা হয় হাট মালিক ইছাহাক আলীর সাথে। তিনি জানান, হাটবাজার ইজারা নেয়ার পর দেখা যায়, এলাকায় প্রচুর কাঁচা মরিচের চাষ শুরু হয়েছে। এখানে কাঁচা মরিচের পাইকারি হাট বসানো হলে এলাকার চাষিদের কষ্ট করে দূরের হাটে যেতে হবে না। এতে করে চাষিরা যেমন সুবিধা পাবে, তেমনিভাবে হাটের টোল আদায়ও বেশি হবে। তাই তিনি কাঁচা মরিচের পাইকারি হাট বসানোর উদ্যোগ নেন।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে এই হাটে দূর-দূরান্ত থেকে চাষিরা তাদের ক্ষেতের মরিচ নিয়ে এসে সরাসরি পাইকারি ব্যাপারীদের কাছে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করে থাকেন। প্রতিদিন বাজার বসার কারণে চাষিদের খেতের ফসল নষ্ট হয় না।
মরিচ চাষি মির্জাপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, বাজারটিতে পার্শবর্তী চুয়াডাঙ্গা জেলার হিজলগাড়ি, আন্দুলবাড়িয়া, গবরগাড়া, তেঘরি, বাটিকাডাঙ্গা, তিতুদোহা, হুলিয়ামারি, হরিণাকুন্ডু উপজেলার কুলবাড়িয়া, নারায়ণকান্দি, হিজলী,কাপাশাটিয়া, শাখারীদহ, গবরাপাড়া, সোনাতনপুর, কোটচাঁদপুর উপজেলার তালশার, দোড়া, পাচলিয়া, দয়ারামপুর, ধোপাবিলা, লহ্মীপুর, তালসার, সদর উপজেলার মধুহাটি, সাধুহাটি, হলিধানী এবং সাগান্না ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা তাদের খেতের মরিচ বিক্রি করতে নিয়ে আসেন।
ওয়াড়িয়া গ্রামের কৃষক চাঁন মিয়া বলেন, ‘এই হাটে প্রায় ৫০-৬০জন শ্রমিক কাজ করে। মরিচ ওজন করা থেকে শুরু করে বস্তায় ভরা ও গাড়ি লোড দেয়া পর্যন্ত তাদের দায়িত্ব থাকে। এতে করে তারা বস্তা প্রতি ৫০ টাকা মজুরি পেয়ে থাকেন।’
কথা হয় পাইকারি ব্যাপারী চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের আনোয়ার হোসেনের সাথে। তিনি জানান, বাজার গোপালপুর হাট থেকে প্রতিদিন কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি দুই ট্রাক করে কাঁচা মরিচ ক্রয় করেন। এই মরিচ ফরিদপুর, মাদারীপুর, বরিশাল, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে বিক্রি করেন।
তিনি আরও জানান, মরিচ আমদানি করতে ব্যাপারীরা আসেন ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ি, বরিশাল, মানিকগঞ্জ, সাভার, ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামে থেকে।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মেজবাহ আহামেদ জানান, মরিচ চাষ লাভজনক ফসল। বর্তমানে দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি মরিচের দাম ছিল ৮০-৯০ টাকা। বর্তমানে ৫০-৬০ টাকা দরে মরিচ বিক্রি হচ্ছে। মরিচের হাট হিসেবে বাজার গোপালপুর হাট ইতোমধ্যে সারাদেশে সুনাম অর্জন করেছে। হাটটা ধরে রাখতে পারলে ও বাজার ব্যবস্থা জোরদার করতে পারলে সরকার ও ব্যবসায়ী উভয়ই লাভবান হবে বলে তার বিশ্বাস।
আহমেদ নাসিম আনসারী/এসআর