রাজশাহীতে কঠোর নিরাপত্তা, তবুও শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক রাজশাহী
প্রকাশিত: ০৮:২৯ পিএম, ২৭ জুলাই ২০১৮

রাজশাহীতে সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রথম ধাপের নিরাপত্তা বাস্তবায়ন হচ্ছে ২৮ জুলাই মধ্যরাত থেকেই। তবে ২৯ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত পুরো নির্বাচনী এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা বলবৎ থাকবে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে এ উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

তবে এতো কিছুর পরও সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা কাটছে না বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের। নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়ে আসছেন তিনি। তবে সেনা মোতায়েন প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোটে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এরই মধ্যে ভোটকেন্দ্র ঘিরে নিরাপত্তা পরিকল্পনা ঢেলে সাজিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নগরীর ৩০ নং ওয়ার্ডের ১৩৮ ভোট কেন্দ্রের ১১৪টি রাখা হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ) তালিকায়। বাঁকি ২৪ ভোটকেন্দ্র সাধারণ। প্রত্যেক ভোটকেন্দ্র নিয়ে আলাদা নিরাপত্তা পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

নগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা বলছে, সবকটি ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা তারা ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ) এবং সাধারণ ক্যাটাগরিতে নিয়েছেন। নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানাধীন ভোট কেন্দ্র ৫৭টি। এর সবকটিই ঝুঁকিপূর্ণ। নগরীর রাজপাড়া থানায় ৩২ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১২টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২০টি সাধারণ।

১৫টি করে ভোট কেন্দ্র নগরীর মতিহার ও চন্দ্রিমা থানা এলাকায়। দুই থানাতেই ১৪টি করে ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রয়েছে। কাশিয়াডাঙ্গা থানা এলাকায় ১৫ ভোটকেন্দ্রের সবগুলোই ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া শাহমখদুম থানার ৮টির মধ্যে ৬টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২টি সাধারণ ভোটকেন্দ্র।

প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রে পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শক ও একজন সহকারী উপ-পরিদর্শক ছাড়াও পাঁচজন কনস্টেবল দায়িত্বপালন করবেন। তাদের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন ১৪ জন সাধারণ এবং একজন ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্য। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের ক্ষেত্রে প্রতেক ভোটকেন্দ্রে আরও দুইজন ব্যাটালিয়ন আনসার দায়িত্ব পালন করবেন। ভোটকেন্দ্রের বাইরে থাকবে তিন স্তরের নিরাপত্তা।

এদিকে ভোটের নিরাপত্তায় পুরো নগরীকে ছয় সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি সেক্টর ভাগ করা হয়েছে আরও দুটি উপ-সেক্টরে। প্রতি সেক্টরে একজন করে পুলিশ সুপার এবং উপ-সেক্টরে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দায়িত্ব পালন করবেন।

ভোটকেন্দ্রের বাইরেও আইন-শৃংখলা বাহিনীর উপস্থিতি থাকবে। প্রতি তিন কেন্দ্রে পরিদর্শকের নেতৃত্বে পুলিশের ৯ সদস্যের ভ্রাম্যমাণ দল থাকবে। প্রতি ছয় কেন্দ্রের জন্য এএসপির নেতৃত্বে থাকবে আলাদা স্ট্রাইকিং রিজার্ভ ফোর্স। উপ-পরিদর্শকের নেতৃত্বে প্রতি তিন কেন্দ্রে সাতজনের একটি করে দাঙ্গা দমন দল দায়িত্ব পালন করবে।

প্রতি ৪টি কেন্দ্র নিয়ে পুলিশ চেকপোস্ট থাকবে একটি। উপ-পরিদর্শকের নেতৃত্বে চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করবেন ৮ পুলিশ সদস্য। বিশেষ স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে রিজার্ভে থাকবে পুলিশ ও আনসারের ১২টি দল। প্রতিটি দলে সদস্য থাকবেন ১৬ জন করে। পুলিশ এছাড়া র্যাব, বিজিবি ও আনসার সদস্য টহল দেবে নগরজুড়ে। ৩০ ওয়ার্ডে ৩০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট থাকছে। ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে একজন করে থাকছেন বিচারিক হাকিম।

এদিকে ২৮ জুলাই মধ্যরাতেই শেষ হচ্ছে ভোটের প্রচার-প্রচারণা। তখন থেকেই নগরী ছেড়ে যেতে হবে বহিরাগতদের। যান চলাচলেও আরোপ করা হবে বিধিনিষেধ। ২৯ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা থাকছে।

নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান বলেন, নির্বাচনী সামগ্রী বণ্টন হয়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ভোটের আগের দিনই সেগুলো কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে। ভোটে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা থাকছে। আশা করি আমরা শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারবো।

বিএনপি প্রার্থীর সেনা মোতায়েন দাবির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, নির্বাচনের যে পরিবেশ থাকে এখানকার পরিবেশ তার চেয়ে অনেক বেশি ভালো। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কোনো সুযোগই নেই। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দিয়ে নিরাপদে ঘরে ফিরে যেতে পারবেন। এই পরিস্থিতিতে সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন নেই।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।