রাজশাহীতে জনগণের মুখোমুখি মেয়র প্রার্থীরা, আসেননি লিটন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক রাজশাহী
প্রকাশিত: ০৬:৩৪ পিএম, ১৪ জুলাই ২০১৮

নির্বাচিত হলে নাগরিক সব সমস্যার সমাধানসহ দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত আধুনিক নগর গড়ার অঙ্গীকার করেছেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) নির্বাচনের চার মেয়র প্রার্থী। শনিবার দুপুরে নগরীর একটি কনভেনশন সেন্টারে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠানে তারা এ অঙ্গীকার করেন। তবে এ অনুষ্ঠানে আসেননি আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত চার মেয়র প্রার্থী হলেন- বিএনপি মনোনীত মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির হাবিবুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শফিকুল ইসলাম ও গণসংহতি আন্দোলন সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মুরাদ মোর্শেদ।

নির্বাচিত হলে নাগরিক সব সমস্যার সমাধানসহ দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত আধুনিক নগর গড়ার অঙ্গীকার করেন মেয়র প্রার্থীরা। একই সঙ্গে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে সব ধরণের সহায়তাসহ ১৩ দফা অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেন তারা।

ওই অনুষ্ঠানে নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন উপস্থিত না হওয়ায় অংশগ্রহণকারী ভোটারদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তবে অনুষ্ঠান চলাকালে নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসলাম সরকার উপস্থিত হয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে দুঃখ প্রকাশ করেন।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নওশের আলী। এক নিকট আত্মীয়ের জানাজায় অংশ নেয়ায় লিটন এ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন তারা।

অনুষ্ঠানে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে ভোট কারচুপিকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান ভোটারদের।

তিনি বলেন, গত মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন তিনি। পুরো মেয়াদের মাত্র ২৬ মাস দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়েছেন।
এ সময়ের মধ্যে নগরীর উন্নয়নে কাজ করেছেন। আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে রাজশাহী নগরীকে পৃথিবীর উন্নত নগরীতে উন্নীত করার পরিকল্পনা তার। আবারও মেয়র নির্বাচিত হলে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করবেন সাবেক এই মেয়র।

অনুষ্ঠানে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মুরাদ মোর্শেদ বলেন, নির্বাচিত হলে তিনি রাজশাহী সিটিকে দৃষ্টিনন্দন নগরী হিসেবে গড়ে তুলবেন। মানবিক মর্যাদা সম্পন্ন নগরী হয়ে উঠবে রাজশাহী। যেখানে সকল নাগরিক সমান সুযোগ সুবিধা ভোগ করবেন। দুর্নীতিমুক্ত মডেল নগর হিসেবে রাজশাহীকে গড়ে তুলতে ভোটারদের সমর্থন চান তিনি।

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো. হাবিবুর রহমান বলেন, রাজশাহী নগরীরর জলাবদ্ধতা নিরসন, সড়ক উন্নয়নসহ নাগরিক সমস্যাগুলোর সমাধান তার প্রধান অগ্রাধিকার হবে। সেই সাথে নগরী বস্তি এলাকার অধিবাসীদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেবেন তিনি।

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, জনগণের উন্নয়ন আর প্রতিশ্রুতির ফুল ঝুড়ি দিতে চাই না। জনগণ সবার ওপরে। নির্বাচিত হলে নগর ভবনে নগরপিতা হিসেবে নয় সেবক ভবনে নগরের সেবক হিসেবে যেতে চাই। রাজশাহীকে সমৃদ্ধ শিল্পনগরী হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা থাকবে।

অনুষ্ঠানে সুজন কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, রাজশাহী সম্প্রীতির শহর। আমি বিশ্বাস করি, শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোট দেয়ার সুযোগ পাবেন এখনকার ভোটাররা। দেখে শুনে বুঝে ভোটাধিকার প্রয়োগে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

দর্শক সারি থেকে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী শান্তিপূর্ণ ও অবাধ নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান।

সুজন রাজশাহী নগর কমিটির সভাপতি মো. পিয়ার বক্সের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন সুজন জেলা কমিটির সভাপতি সফিউদ্দিন আহমেদ। এতে নগরীর বিভিন্ন এলাকার ভোটাররাও অংশ নেন। ভোটারদের নানান প্রশ্নের উত্তর দেন মেয়র প্রার্থীরা। অনুষ্ঠানে ভোটররাও দেখে-শুনে, যাচাই-বাছাই করে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেয়ার শপথ নেন।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।