বন্ধ হয়ে গেছে শানুর চিকিৎসা
প্রথমে দু'পায়ের মাংসপেশী ফুলে যাচ্ছে। এরপর ফুলে যাওয়া অংশগুলো ফেটে যাচ্ছে। সবশেষে ফেটে যাওয়া অংশগুলো ঘাঁয়ে পরিণত হচ্ছে। আর সেখান থেকে অনবরত পড়ছে রক্ত ও পূজ। তারপরও থেমে নেই ৭ বছর বয়সী সাদিয়া জান্নাত শানু। যেদিন সে নিজেকে সুস্থ মনে করছে ছুটে যাচ্ছে মাদরাসায়। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ধরণীবাড়ী নূরাণী হাফিজিয়া মাদরাসায় প্রথম শ্রেণির ছাত্রী সে।
শানু উলিপুরের ধরণীবাড়ী ইউনিয়নের তেলীপাড়া গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলামের মেয়ে। ডাক্তারি ভাষায় শানুর এ রোগের নাম polyarteritis nodosa (PAN)।
জন্মের পর থেকে স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে উঠছিল শানু। ২০১৫ সালের শেষের দিকে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে সে। তখন থেকেই শানুকে নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ছুটছে তার বাবা মা। মেয়ের পেছনে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করেছেন তারা। কিন্তু চূড়ান্ত কোনো ফল পাননি।
কিছুদিন আগে শানুকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রায় ১ মাস চিকিৎসা দেয়া হয় তাকে। বর্তমানে সেখানকারই চিকিৎসা চলছে তার। প্রতি মাসে ৬ হাজার টাকার ওষুধ খেতে হচ্ছে তাকে।
শানুর দাদা নুরুল আমিন বলেন, এমন ওষুধ যা আশপাশে কোনো দোকানে পাওয়া যায় না। রংপুরে বড় বড় দোকানে টাকা বুকিং দিয়ে ওষুধ নিতে হয়। প্রতিবেশীদের অনেকেই জানান, শানুর চিকিৎসা করাতে তার বাবা-মা সব শেষ করে ফেলেছে।
ধরণীবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম ফুলুর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমিসহ এলাকার লোকজন শানুর বাবাকে সাধ্যমতো সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
উলিপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, এ রোগটি খুবই ভয়ানক। ভালোভাবে চিকিৎসা নিলে শানু সুস্থ হয়ে যাবে।
শানুর বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, মেয়েকে সুস্থ করতে এ পর্যন্ত অনেক টাকা খরচ করেছি। জায়গা জমি সব বিক্রি করে দিয়েছি। বিক্রি করার মতো আর কিছুই নাই। তবুও সুস্থ হচ্ছে না মেয়ে। প্রতিমাসে ওর পেছনে অনেক খরচ। অথচ আমি সংসারই চালাতে পারি না ওর চিকিৎসা করাবো কীভাবে?
এমএএস/পিআর