তোফা-তহুরার মতো ওরাও কি পারবে?
শেরপুরে জন্ম নেয়া জোড়া মাথার যমজ শিশুদের চিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দরিদ্র রিকশাচালক রুবেল মিয়া ওর তার পরিবার। কিভাবে কন্যা শিশু দু’টিকে আলাদা করা যাবে, এরজন্য প্রয়োজনীর অর্থ কিভাবে, কোথায় মিলবে সেই চিন্তায় অপেক্ষার প্রহর গুনছেন পরিবারের সদস্যরা।
সদ্যোজাত যমজ এ দুই শিশু নার্সিং হোমে সুস্থ থাকলেও তাদের মা রেহেনা বেগমের শারীরিক অবস্থা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। শারীরিকভাবে এখনো তিনি দুর্বল বলে জানিয়েছেন চিকৎসকরা। তবে নবজাতকরা জন্মের পর থেকে তাদের মায়ের বুকের দুধ খাচ্ছে বলে জানিয়েছেন নানী শিরিনা বেগম।
দরিদ্র পরিবারটি জোড়া মাথার যমজ শিশুর সুচিকিৎসার জন্য সরকার এবং সমাজের স্বচ্ছল ব্যক্তিদের কাছে সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে মাথা জোড়া লাগানো যমজ শিশুর জন্মের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের দেখার জন্য লোকজন শহরের মাধবপুর এলাকার ফ্যামিলি নার্সিং হোমে ভিড় জমাচ্ছেন।
৭ জুলাই শনিবার সকাল ৯টার দিকে শহরের মাধবপুর এলাকার ফ্যামিলি নার্সিং হোমে পৌর এলাকার চাপাতলী মহল্লার রিকশাচালক রুবেল মিয়ার স্ত্রী রেহেনা বেগম (২১) মাথা জোড়া লাগানো ওই যমজ শিশুর জন্ম দেন। সিনিয়র গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুল গণি সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে এ দুই নবজাতককে ভূমিষ্ট করেন।
ফ্যামিলি নার্সিং হোমের স্বত্বাধিকারী বিএমএ জেলা কমিটির সভাপতি ডা. এম এ বারেক তোতা বলেন, শেরপুরের প্রেক্ষাপটে এ ধরনের অপারেশন আমরা সচরাচর করি না এবং করার সাহসও আমাদের নেই। কিন্তু যেহেতু তারা গরিব লোক, ময়মনসিংহ থেকে ফেরত এসেছেন তাই ব্যতিক্রমধর্মী একটা অপারেশন আমরা করেছি।
তিনি জানান, দু’টো বাচ্চার মাথা জোড়া লাগানো। এটা জটিল একটা অবস্থা। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে হবে। কিন্তু পরিবারটি খুবই গরিব। ঢাকা কিংবা অন্যকোথাও চিকিৎসা করানোর সামর্থ নেই। এজন্য কোনো মেডিকেল কলেজ কিংবা সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত হবে।
যমজ এ দুই শিশুর বাবা রিকশাচালক রুবেল মিয়া বলেন, আমরা গরিব মানুষ। কোনো টাকা-পয়সা নাই। সন্তান আসার সংবাদে খুশি হলেও এখন আমরা বিপদে আছি। কী করবো, কোথায় যাবো, কার কাছে যাবো, কিভাবে চিকিৎসা হবে, কোথায় টাকা পাবো, কিছুই চিন্তা করে পারছি না। আমি সকলের কাছে এ বিষয়ে সাহায্য-সহযোগিতা চাই।
প্রসঙ্গত, এর আগে পিঠ থেকে কোমর পর্যন্ত জোড়া লাগা গাইবান্ধার দুই শিশু তোফা-তহুরাকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। বিষয়টি দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিতও হয়েছিল। তাই সকলে মিলে উদ্যোগ নিলে বাঁচানো যেতে পারে শেরপুরের এ দুই নবজাতককেও।
হাকিম বাবুল/এফএ/জেআইএম