বান্দরবানে পাহাড় ধসে ৪ জনের মৃত্যু
ভারী বর্ষণে বান্দরবানে পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ও দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলেন মোহাম্মদ হানিফ, তার স্ত্রী রেজিয়া বেগম (২৫) ও শিশুকন্যা হালিমা আকতার (৩)। তাদের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, জেলার লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের কালাইয়াছড়া এলাকায় মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভারী বর্ষণে পাহাড় ধসে মাটির তৈরি গুদামঘরের নিচে চাপা পড়ে শিশুসহ একই পরিবারের তিনজন। খবর পেয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। দীর্ঘ চেষ্টার পর ধসে পড়া পাহাড়ের মাটির নিচ থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে, জেলা শহরের কালাঘাটায় মঙ্গলবার বেলা ১১টায় পাহাড় ধসে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত নারীর নাম প্রতিমা রাণী (৫০)। তিনি কালাঘাটার বাসিন্দার মিলন দাশের স্ত্রী।
কেয়াজুপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ কাশেম আলী জানান, সরই ইউনিয়নের কেয়াজুপাড়া এলাকায় কালাইয়াছড়াতে বৃষ্টিতে পাহাড়ের একটি অংশ গুদামঘরে ধসে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে দুপুর আড়াইটার দিকে মাটির নিচ থেকে স্বামী, স্ত্রী ও তাদের কন্যাসন্তানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রুপম কান্তি দাশ জানান, পাহাড় ধসে কালাঘাটায় মাটির নিচে চাপা পড়া নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দীর্ঘ তল্লাশির পর মাটির নিচে আর কেউ নিখোঁজ না থাকায় দুপুর দেড়টার দিকে উদ্ধার তৎপরতা সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
বান্দরবানের মৃত্তিকা পানি সংরক্ষণ কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহাবুবুল ইসলাম জানান, গত রোববার থেকে বান্দরবানে অবিরাম ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বান্দরবানে ১১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরও কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টিতে আরও পাহাড় ধসের শঙ্কা রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো থেকে লোকজনদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।
এদিকে, অব্যাহত বর্ষণে জেলা শহরের মেম্বারপাড়া, আর্মীপাড়া, শেরেবাংলানগর, ইসলামপুরসহ আশপাশের এলাকায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টিতে বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের বরদুয়ারাসহ কয়েকটি স্থানে প্রধান সড়ক কয়েক ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আর বালাঘাটায় পুলপাড়া বেইলি ব্রিজ খালের পানিতে ডুবে গেছে। সড়ক ও বেইলি ব্রিজ তলিয়ে যাওয়ায় বান্দরবানের সঙ্গে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটিসহ সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, লামায় পাহাড় ধসে শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
সৈকত দাশ/এএম/পিআর/এমএস