আতঙ্কে হাসপাতাল ছেড়েছেন সেই পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী


প্রকাশিত: ০১:১৪ পিএম, ০৪ আগস্ট ২০১৫

নড়াইলে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে আহত করে হাসপাতালে পাঠানো পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন গৃহবধূর পরিবারের সদস্যরা। মামলার পর পরই ঘটনা মীমাংসা করে অসুস্থ নাজকে বাড়ি ফিরিয়ে নেয়ার জন্য পুলিশ কর্মকর্তার পরিবারের লোকজনসহ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নড়াইল সদর হাসপাতালে ভীড় করে।

তারা শামীমা শারমিন নাজ এর হাত ধরে টানাটানি করে তাকে স্বামীর সংসারে ফিরে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এতে অত্যন্ত বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয় সদর হাসপাতালে। নার্স ও ডাক্তাররা ছুটে আসলে নাজ এর শ্বশুর বাড়ির লোকেরা পারিবারিক ব্যাপার বলে চালিয়ে দিতে চান । এ সময় মানসিক চাপে অসুস্থ নাজ আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন ।

নাজের মা রাশিদা বেগম জাগো নিউজকে জানান, মঙ্গলবার সকালে নাজের শ্বশুর কাজী আবু বকর, ননদাই হুমায়ুন ফকির, কামালের মামা মোহন মন্ডল সহ আরো কিছু আত্নীয় স্বজন এসে আমার অসুস্থ মেয়েকে শ্বশুর বাড়ি ফিরে যেতে বলে ।

এর পর পরই লোহাগড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. বদর খন্দকার আরো ১০/১২ জনকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করে। আমরা এতগুলো লোক দেখে ভয়ে চেঁচামেচি করলে নার্সরা ছুটে আসলে তারা সরে যায়। এরপর অব্যাহত চাপ এর ভয়ে আমি আমার মেয়েকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আসি।

মায়ের বাড়িতে বিছানায় শুয়ে অসুস্থ শামীমা শারমিন নাজ জাগো নিউজকে জানান, ওদের পরিবারের ছেলেরা বৌ পেটায়। এর আগে তার (কামালের) চাচার অত্যাচারে  বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন তার স্ত্রী।  

তিনি কাঁদতে কাঁদতে জাগো নিউজকে জানান, দেশে যদি সঠিক বিচার থাকে তবে আমি যৌতুকলোভী, নারী নির্যাতনকারী কামালের বিচার চাই। এর আগে অন্তত ২০ বার পরিবারের লোকেরা সালিশ করে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করেছে। আমি ওই সংসারে গেলে আমাকে কামালের মার খেয়ে মরতে হবে অথবা আত্নহত্যা করতে হবে।

নড়াইল সদর হাসপাতালে কামালের পরিবারের পক্ষে দলবল নিয়ে আসা লোহাগড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. বদর খন্দকার জাগো নিউজকে জানান, ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে না আমি গেছিলাম কামালের আত্নীয় হিসেবে। পরিবারে অশান্তি থাকেই তা নিয়ে মামলা করলে চলে ? আমি নাজকে বুঝিয়ে শ্বশুর বাড়ি নিয়ে যেতে হাসপাতালে গিয়েছি। অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয় ।

নড়াইল সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. আছাদ-উজ-জামান মুন্সী জাগো নিউজকে জানান, মেয়েটি শারিরীক ও মানসিকভাবে অসুস্থ থাকার পরেও তাকে পরিবারের লোকদের অনুরোধে ডিসচার্জ করা হয়েছে ।

নড়াইলের পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম চাপের মুখে নাজের হাসপাতাল ছেড়ে বাড়িতে চলে আসার ঘটনা সম্পর্কে তেমন কিছু না জানলেও জাগো নিউজকে জানান, অসুস্থ নাজ এর হাসপাতালে দেখভালের জন্য সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন আছে । নিরাপত্তা বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, নাজকে যদি কেউ বিরক্ত করে /হুমকি দেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করলে মামলা নেয়া হবে ।

হাফিজুল নিলু/এসএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।