নজিরবিহীন প্রস্তুতি গাজীপুরে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গাজীপুর
প্রকাশিত: ০৯:০৯ এএম, ২৪ জুন ২০১৮

নজিরবিহীন কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। নির্বাচনের আর মাত্র একদিন বাকি থাকলেও ইতোমধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছেন নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে সার্বিক নিরাত্তার জন্য বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ, এপিবিএন, আনসারসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর প্রায় ১১ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবে।

বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ, আনসার সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিজিবি সদস্যদের বহনকারী যানবাহন গাজীপুরে মহাসড়কে চলাচল করতে দেখা গেছে, তারা বিভিন্ন এলাকা রেকি করছেন। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ২৯ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করছেন।

গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, সিটি নির্বাচন উপলক্ষে ইতোমধ্যে পুরো গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলেছে আইনশৃংখলা বাহিনী। পোশাক ছাড়াও বিপুল পরিমাণ পুলিশ সাদা পোশাকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে দায়িত্ব পালন করছেন। নির্বাচন উপলক্ষে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পুলিশসহ আইনশৃংখলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার রকিব উদ্দিন মন্ডল জানান, আজ মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে নির্বাচনের সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। ইতোমধ্যে ৯ হাজার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।

তিনি জানান, নগরীর ৫৭টি ওয়ার্ডে পুলিশ ও আনসারের সমন্বয়ে ৫৭টি স্ট্রাইকিং ফোর্স ও সংরক্ষিত আসনে ২০টি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। র‌্যাব ইতোমধ্যে ডিপ্লয়মেন্ট শুরু করেছে। ৫৭টি ওয়ার্ডে ৫৭টি এবং অতিরিক্ত একটিসহ মোট ৫৮টি টিম মোতায়েন থাকবে। প্রতি দুইটি ওয়ার্ডে এক প্লাটুন করে মোট ২৯ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করবে। এদের মধ্যে ৭ প্লাটুন কোনাবাড়ি ও কাশিমপুর এলাকায়, ১০ প্লাটুন টঙ্গী এলাকায় এবং ১২ প্লাটুন জয়দেবপুর, বাসন চান্দনা চৌরাস্তা ও কাউলতিয়া এলাকায় দায়িত্ব পালন করবেন।

এছাড়া পুলিশ এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ান আনসার সমন্বয়ে ৫৭টি ওয়ার্ডে ৫৮টি মোবাইল ফোর্স, ২০টি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত থাকবে।

নির্বাচনের আগে ও পরে চার দিন ৫৭টি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন। আরো ১০ জন অতিরিক্ত হিসেবে সর্বমোট ৬৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন থাকবেন। সিটি কর্পোরেশনের প্রতি তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে মোট ১৯জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন। তারা ২৪ জুন থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত নগরীতে দায়িত্ব পালন করবেন।

রিটার্নিং অফিসার বলেন, এই বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ করা। নির্বাচনী এলাকায় যাতে কেউ গোলযোগ, অনিয়ম করতে না পারে। যারা কাজে নিয়োজিত থাকবে আগামী ২৫ জুন সকালে তাদের জন্য একটা প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। এই প্রশিক্ষণে তাদের দায় দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিত করা হবে।

সিটি কর্পোরেশনের ৪২৫টি কেন্দ্রে এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ৩৩৭টি গুরুত্বপূর্ণ এবং ৮৮টি সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র গুলোতে পুলিশ, আনসার ভিডিপিসহ ২৪ জন (১২ জন অস্ত্রধারী) সদস্য মোতায়েন থাকবে। আর সাধারণ কেন্দ্রগুলোতে ২২ জন (১০ জন অস্ত্রধারীসহ) সদস্য মোতায়েন থাকবে।

আগামী ২৬ জুন অনুষ্ঠিত হবে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। ৫৭টি সাধারণ এবং ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড বিশিষ্ট এ সিটি কর্পোরেশনের মোট ভোটার ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৭। এরমধ্যে ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৯৩৫ জন পুরুষ এবং ৫ লাখ ৬৭হাজার ৮০১ জন নারী ভোটার।

এ নির্বাচনে ৭ জন মেয়র পদে, ৮৪ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৫৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

আমিনুল ইসলাম/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।