বেড়িবাঁধ ভাঙায় আশ্রয়ের খোঁজে বানভাসিরা


প্রকাশিত: ১১:২৯ এএম, ০৩ আগস্ট ২০১৫

খুলনা জেলার ডুমুরিয়ার চাঁদগড়ের বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত এলাকার হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয় যেতে শুরু করেছেন। ভদ্রা নদীতে প্রচণ্ড পানির চাপ থাকায় বানিয়াখালী-সুন্দরমহল সড়কের উপর দিয়ে উপচে পড়া পানিতে শরাফপুর ইউনিয়নের আরো ২টি বিল প্লাবিত হয়েছে। সবমিলে এ পর্যন্ত ৪টি বিল এবং ৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

পানিতে হাজার হাজার মৎস্য ঘের ভেসে একাকার হয়ে গেছে। ভেসে গেছে চাঁদগড় বটতলা মোড়ের সকল দোকান-পাটও। রাতের জোয়ারের পানিতে গোটা ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গত ৩দিন আগে উপজেলার চাঁদগড়ের ওয়াপদার বেড়িবাঁধ ভেঙে ডুমুরিয়া চাঁদগড়, আকড়া, বাহির আকড়া ও বটিয়াঘাটার সম্ভুনগর, কোদলা, সুন্দরমহল, রুহিতমারা গ্রামগুলি প্লাবিত হয়। ক্রমান্বয়ে ভদ্রা নদীর প্রবল পানির চাপে রোববার বিকেলে সুন্দরমহল-বানিয়াখলী সড়কটির কয়েকটি স্থান ভেঙে এবং উপচে পড়া পানিতে রতনখালী ও ভুলবাড়িয়া বিল তলিয়ে একাকার হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে পড়ে যান চলাচল।

এদিকে ভদ্রা নদীতে প্রবল পানির চাপ থাকায় স্বেচ্ছাশ্রমেরাও হাল ছেড়ে দিয়েছে। ইতোমধ্যে বানভাসি মানুষ ঘর ছেড়ে বানিয়াখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। এছাড়া আকড়া মিঠে পুকুরপাড়ে অস্থায়ীভাবে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে প্রায় ৫ শতাধিক লোক আশ্রয় নিয়েছেন।

প্রতিমন্ত্রী পরিদর্শনকালে বলেন, নিম্নচাপ ও অতিবৃষ্টির ফলে ডুমুরিয়ার ৫০ বছরের ভাঙন এবার ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। যার ফলে বিকল্প বাঁধ নির্মাণের জন্য ৪৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের ব্যাপক গাফিলতির কারণে এ অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ ক্ষতির শিকার হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ভাঙনরোধে বড় ধরনের বরাদ্দের প্রয়োজন। ১৮ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেটটি খুব দ্রুত অনুমোদন হলে স্থায়ীভাবে সমাধান হবে।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুজিবুর রহমান ও ঠিকাদার হাবিব বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলামসহ এলাকার শতাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, জমির মালিকরা সঠিক সময়ে জমি দিতে রাজি ছিল। কিন্তু অজানা কারণে পাউবো’ কর্মকর্তা এসও কৃষ্ণপদ দাস ও ঠিকাদার হাবিব বিশ্বাসের গাফিলতিতে রাস্তা মেরামত শেষ হয়নি। বাইনতলার খালসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের কাজ অসমাপ্ত রেখে ঈদের আগেই চলে যায়। এরপর এলাকাবাসী একাধিকবার পাউবো কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালেও কোনো কাজ হয়নি।

আলমগীর হান্নান/এসএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।