মৌলভীবাজারে বন্যায় ৪০ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত, নিহত ৭
মৌলভীবাজারে বন্যায় চারটি উপজেলার ৩০টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় প্রায় ৪০ হাজার ২০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিতে ডুবে নিহত হয়েছে সাতজন। নষ্ট হয়েছে দুই হাজার ৯৬০ হেক্টর আউশ ধান। সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক লাখ ৯৫ হাজার ৯৬ জন মানুষ। জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম এই তথ্য জানিয়েছেন।
প্লাবিত চার উপজেলা হলো- মৌলভীবাজার সদর, কুলাউড়া, কমলগঞ্জ ও রাজনগর।
জেলা প্রশাসক জানান, জেলায় মনু ও ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধের ২৫ স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচ হাজার ৩৯০ জনকে উদ্ধার করে ৫০টি আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। মৌলভীবাজার সদরে খোলা হয়েছে ছয়টি আশ্রয় কেন্দ্র। এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর মধ্যে আছে সরকারি কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, টেকনিকেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পলিটেকনিক ইনসট্রিটিউট, পিটিআই। এ ছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে আরও কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। যেখানে বিএনসিসি, স্কাউটসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে খাবার রান্না করে বিতরণ করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, সেনাবাহিনীর চারটি টিম বন্যাদুর্গত এলাকায় কাজ করছে। তারা পানিবন্দিদের উদ্ধারে ১৮টি স্পিডবোট ব্যবহার করছে। জেলায় নগদ নয় লাখ ৪০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। বিতরণের অপেক্ষায় আছে ১০ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে ৭৪৩ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। মজুদ আছে ৬৬৮ টন চাল। তিন হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট পাওয়ার আশ্বাস মিলেছে। শহরের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বিজিবি টহল দিচ্ছে।
তিনি বলেন, সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে ৭৪টি মেডিকেল টিম বন্যাকবলিত এলাকায় কাজ করছে। সেনাবাহিনীর ২১ ইঞ্জিনিয়ার্সের একটি ইউনিট, জেলা পুলিশ, ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়ন, স্বাস্থ্যবিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, বিএনসিসি, রেডক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থাও কাজ করছে। দুর্গত এলাকা থেকে জরুরি যোগাযোগের জন্য একটি (০১৭২৪৬৮৫৭৮৪) হটলাইন খোলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখার জন্য পুলিশ, বিজিবি কাজ করছে। মনু ও ধলাই নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো বিপদসীমার ১ দশমিক ৩৫ সেমি ওপর দিয়ে প্রভাহিত হচ্ছে।
সোমবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া সোবার মৌলভীবাজার যাবেন বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক।
জেডএ