শোলাকিয়ায় জনসমুদ্র

নূর মোহাম্মদ
নূর মোহাম্মদ নূর মোহাম্মদ কিশোরগঞ্জ
প্রকাশিত: ০২:১৩ পিএম, ১৬ জুন ২০১৮

প্রতি বছরের মতো এবারও দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। শনিবার সকাল ১০টায় শুরু হয় জামাত। এতে ইমামতি করেন, বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমীন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। দেশ-বিদেশের ৩ লাখেরও বেশি মানুষ এ মাঠে একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন।

এদিকে ঈদ ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয় নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ভোর থেকে মুসল্লিরা দলে দলে আসতে থাকেন শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে মুসল্লির সংখ্যা। সকাল ৯টা নাগাদ বিস্তীর্ণ শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান কানায় কানায় ভরে যায়। তখনও শোলাকিয়ার পথে হাজারো মানুষের ফল।

solakia

শোলাকিয়ায় ছিল ১৯১তম ঈদ-উল ফিতরের বড় জামাত। সকাল ১০টায় জামাত শুরু হয়। শোলাকিয়া ঈদগাহের রীতি অনুযায়ী জামাত শুরুর ১৫ মিনিট, ৫ মিনিট ও সবশেষ এক মিনিট আগে বন্দুকের গুলি ছুঁড়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতি জানান দেয়া হয়।

দূরের মুসল্লিদের জন্য ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে ছেড়ে আসে শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেন। নানা কষ্ট আর বিড়ম্বনা স্বীকার করেও দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাতে শরিক হতে পারায় মুসল্লিদের চোখে-মুখে ছিল আনন্দের ঝিলিক।

জামাতে ঈমামতি করেন, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। নামাজ শেষে বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মার শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয়। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. মো. জিল্লুর রহমান, পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজসহ বিশিষ্টজনেরা এ মাঠে নামাজ আদায় করেন।

solakia

ঈদ জামাতকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয় নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ২০১৬ সালে ঈদ-উল ফিতরের দিন নামাজ শুরুর কিছুক্ষণ আগে ঈদগাহের কাছে পুলিশের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। সে বিষয়টি মাথায় রেখে এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়।

চার স্তরের নিরাপত্তায় এক হাজারেরও বেশি র‌্যাব-পুলিশের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করে ৫ প্লাটুন বিজিবি। প্রতিটি প্রবেশ পথসহ মাঠের চারপাশে বসানো হয় ৫০টি ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা। মাঠে প্রবেশের সময় মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে মুসল্লিদের দেহ তল্লাশি করা হয়। মাঠ ও আশপাশের এলাকায় ছিলো ড্রোন ক্যামেরার নজরদারি।

solakia

১৮২৮ সালে ঈদের জামাতে এখানে সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’। যা এখন শোলাকিয়া নামে পরিচিত। ঈশাখার ১৬ তম বংশধর দেওয়ান মান্নান দাদ খাঁন ১৯৫০ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহটি ওয়াকফ করেন। এরও প্রায় দু’শ বছর আগে থেকে শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

নূর মোহাম্মদ/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।