‘বাবার লাশটা আমাদের দেখতেও দেয়নি’
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাজাহান বাচ্চু (৬৫) নিহতের ঘটনায় পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। রাত ১টার দিকে নিহতের পরিবারের মধ্যে দ্বিতীয় স্ত্রী আফসানা, মেয়ে আচল ও ছেলে বিলাশের সঙ্গে কথা বলেন ডিআইজি মামুন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম, সিরাজদিখান সার্কেলের সিনিয়র এএসপি আসাদুজ্জামান, ওসি (ডিবি) ইউনুচ আলী, টঙ্গিবাড়ি থানার ওসি মো. ইয়ারদৌম হাসান, সিরাজদিখান থানার ওসি মো. আবুল কালাম এবং ঢাকা থেকে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি টিম।
শাজাহান বাচ্চুর প্রথম ঘরের ছোট মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে ছাত্রী দূর্বা (২০) বলেন, মরদেহ দেখার আগ পর্যন্ত বিশ্বাস করতে পারিনি বাবা মারা গেছেন। জানি না কারা মারতে পারে। কে করেছে সেটা যেহেতু আমি জানি না, ওমুক দল করেছে এটাও বলব না। তদন্ত শেষে বিষয়টি বলা যাবে।
শাজাহান বাচ্চুর দ্বিতীয় ঘরের বড় মেয়ে আচল বলেন, আমাদের খবর দেয়া হয় বাবা অসুস্থ। প্রথমে ভাবেছিলাম হাই পেশার, কিন্তু গিয়ে দেখি অনেক মানুষের ভিড়; অসুস্থ হয়ে পড়ি। আরও কাছে গিয়ে জানতে পারি বাবার গুলি লেগেছে। বাবার লাশটা আমাদের দেখতেও দেয়নি।
ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গে এসপি, ওসি ও আমি এসেছি। ঢাকা থেকে কাউন্টার টেররিজম টিম এসেছে। আমরা সবাই মিলে এখানে কাজ করছি।
‘সন্ধ্যার আগে একটা ফার্মেসি থেকে শাজাহান বাচ্চু বের হন, বের হওয়ার পর তার ওপর আক্রমণ হয় এবং তাকে হত্যা করা হয়। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা দিয়ে এটার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় এনে রহস্যের উদঘাটন করব।’
প্রসঙ্গত, উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব কাকালদি গ্রামের (মুন্সীগঞ্জ-শ্রীনগর সড়কের) তিন রাস্তার মোড়ে অবস্থিত আনোয়ার হোসেনের ফার্মেসি থেকে বের হওয়ার পর শাজাহান বাচ্চুর ওপর হামলা চালানো হয়। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দুটি মোটরসাইকেলযোগে চার দুর্বৃত্ত এসে তাকে গুলি করে হত্যা করে।
শাজাহান বাচ্চু উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম কাকালদি গ্রামের মরহুম মমতাজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ঢাকার বাংলাবাজারে অবস্থিত বিশাকা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ও সাপ্তাহিক আমাদের বিক্রমপুর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ছিলেন।
ভবতোষ চৌধরী নুপুর/আরএ/জেআইএম