কাপ্তাই লেকের পানি বিপদসীমার কাছাকাছি


প্রকাশিত: ১১:৪১ এএম, ০২ আগস্ট ২০১৫

কাপ্তাই লেকের পানি এখন বিপদসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে। পানির চাপ কমাতে কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্পিলওয়ের ১৬টি গেটের সবকটি খুলে দেয়া হয়েছে। এতে করে কাপ্তাই লেক থেকে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ছে।

অন্যদিকে, কাপ্তাই লেকের পানি ছাড়ার কারণে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়াসহ আশেপাশের ভাটি এলাকায় দেখা দিয়েছে প্লাবনের আশঙ্কা। এর ফলে যে কোনো মুহূর্তে রাঙ্গুনিয়াসহ আশেপাশের বিস্তীর্ণ ভাটি এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

কর্তৃপক্ষ জানায়, টানা বর্ষণে উজান থেকে ঢল ও পানি ধেয়ে আসায় কাপ্তাই লেকে দ্রুত পানির উচ্চতা বেড়ে গেছে। লেকে পানির চাপ সামাল দিতে অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।

কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক আবদুর রহমান জানান, শনিবার দুপুরের পর থেকে কেন্দ্রের স্পিলওয়ের সবগুলো গেট খুলে দিয়ে কাপ্তাই লেকের পানি ছাড়া হচ্ছে। প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। লেক থেকে ছাড়া পানি পড়ছে কর্ণফুলী নদীতে। উজান থেকে নেমে আসা পানির চাপ বাড়লে আরো অধিক পরিমাণে ছাড়তে হবে।

তিনি আরো জানান, কাপ্তাই লেকের রুলকার্ভ অনুযায়ী লেকে স্বাভাবিক নিয়মে পানি রাখতে হয় ৯০ এমএসএল (মীন সি লেভেল) উচ্চতায়। কিন্তু চলতি ভারী বর্ষণে কাপ্তাই লেকে দ্রুত পানি বেড়ে যাওয়ায় বর্তমান লেভেল দাঁড়িয়েছে ১০৫ ফুট উচ্চতায়। লেকের পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট। তা অতিক্রম করলে বিপদসীমার ওপরে চলে যায়।

বর্তমানে লেকে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৫ ফুট বেশি পানি অতিরিক্ত হয়ে গেছে- যা বিপদসীমার কাছাকাছি। এ অবস্থায় বাঁধ রক্ষার জন্য পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্পিলওয়ের খুলে দিয়ে পানি ছেড়ে দিতে বাধ্য হতে হচ্ছে।

জানা যায়, চলতি টানা বর্ষণে উজান থেকে পানি ধেয়ে এসে কাপ্তাই লেকে প্রবল স্রোতে পাহাড়ি ঢল নামতে থাকে। এতে কাপ্তাই লেকের পানি হঠাৎ স্বাভাবিকের অতিরিক্ত ১৫ ফুট বেড়ে গেছে। তাই লেকে পানির চাপ কমাতে ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রে দিনরাত পাঁচ ইউনিট চালু রেখে দৈনিক ২৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। কিন্তু এরপরও উজান থেকে প্রবল ঢল নামতে থাকায় লেকে পানির চাপ কমানো যাচ্ছে না। ফলে স্পিলওয়ের দিয়ে লেকের অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দিতে হচ্ছে বলে জানান ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক আবদুর রহমান।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম মজুদার জানান, কাপ্তাই বাঁধের পানি ছাড়ার কারণে নিম্ন এলাকা প্লাবিত হতে পারে। তাই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে নিম্ন এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরে যেতে বলা হচ্ছে।

সুশীল প্রসাদ চাকমা/এআরএ/এমআরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।