গণধর্ষণ, হত্যা ও লাশ গুমের নির্মম বর্ণনা দিলো ধর্ষক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ০৯:২৫ এএম, ০৪ জুন ২০১৮

মৌলভীবাজারে রাজনগরে উদ্ধারকৃত অজ্ঞাত মরদেহের পরিচয় মিলেছে। নিহতের নাম রাশেদা বেগম (৩০)। তাকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন মামলায় আসামি আবারক মিয়া।

শুক্রবার রাতে রাজনগর থানা পুলিশ দক্ষিণ খারপাড়া গ্রামে মাছুয়া নদী থেকে ভাসমান ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে নিহতের ভাই রাজনগর থানায় গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করে মামলা করেন।

নিহত রাশেদা বেগম সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার পূর্বপৈলনপুর ইউনিয়নের অইয়া গ্রামের মৃত ফরাসত মিয়ার মেয়ে।

এ ঘটনায় পুলিশ আবারক মিয়া (২২) নামে একজনকে গ্রেফতার করে। তিনি উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়নের ছিককা গ্রামের মজম্মিল মিয়া ওরফে মজু মিয়ার ছেলে।

রোববার বিকেলে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রাশেদাকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে মরদেহ গুম করা হয়েছিল বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন গ্রেফতার আবারক মিয়া।

মামলার সূত্রে জানা যায়, রাশেদা বেগমের (৩০) সঙ্গে মুঠোফোনে পরিচয় হয় গ্রেফতার আবারক মিয়া ও মৌলভীবাজারের এক যুবকের। এরসূত্র ধরে বেশ কয়েকবার তাদের দেখা-সাক্ষাতও হয়েছে। গত বুধবার তাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য মৌলভীবাজার আসেন রাশেদা বেগম। বুধবার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের ওই যুবককে নিয়ে রাজনগর উপজেলা পরিষদের সামনে আসেন রাশেদা। এসময় ওই যুবক আবারক মিয়াকেও ফোন করে রাজনগর নিয়ে আসেন।

রাশেদাকে নিয়ে তারা উপজেলা পরিষদের পার্শ্ববর্তী মাছুয়া নদীর ধার ঘেসে পশ্চিম দিকে যেতে থাকেন। এসময় দক্ষিণ খারপাড়া গ্রামের মোবারক মিয়ার বাড়ির পশ্চিম পাশে নদীর ধারে এসে ওই যুবক রাশেদাকে কুপ্রস্তাব করেন। এতে সে রাজি না হওয়ায় উভয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে ধর্ষকরা। পরে মরদেহের সঙ্গে ইট বেঁধে নদীতে ফেলে দেন রাশেদার মরদেহ।

এ ঘটনায় রাশেদার ভাই আব্দুল খালিদ বাদী হয়ে রাজনগর থানায় মামলা করেন। পরে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে রাজনগর থানার এসআই জিয়াউল ইসলাম ও এসআই রাজিব হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আবারক মিয়াকে কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার থেকে গ্রেফতার করে।

রোববার বিকেলে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুল হকের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আবারক। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

এদিকে নিহতের ভাই মামলায় উল্লেখ করেছেন পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে রাশেদা বেগম ধান কেনার জন্য এসেছিলেন। তাদের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকার ধান কেনার কথা ছিল। তবে নিহতের টাকা ছিনিয়ে নেয়ার কথা স্বীকার করেনি আসামি আবারক মিয়া।

রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বণিক বলেন, মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপরজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। খুব দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।

রিপন দে/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।