টাকা ছিনিয়ে নেয়ায় পুলিশ সদস্য গ্রেফতার
শেরপুরে নালিতাবাড়ী উপজেলায় এক ব্যক্তির ৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে এক পুলিশ সদস্য ও এক নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে গ্রেফতারদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন- পুলিশ সদস্য হাফিজুর রহমান ও তার চাচি ফেরদৌসী বেগম (৩০)। পুলিশ সদস্য হাফিজুর রহমান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পশ্চিম শাখায় কর্মরত বলে জানা গেছে।
এদিকে ছিনতাই হওয়া ৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকার মধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার দুইজনের নিকট থেকে ৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল বাজারের বাসিন্দা মোজ্জামেল হক (৪২) একটি খননযন্ত্র কিনতে ৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা নিয়ে নালিতাবাড়ী পৌর শহরে যান। এ সময় বৃষ্টির কারণে শহরের গড়কান্দা এলাকায় পূর্ব পরিচিত মোস্তাফিজুর রহমানের স্ত্রী ফেরদৌসী বেগমের বাড়িতে যান। এ সময় ফেরদৌসীর স্বামীর বড় ভাইয়ের ছেলে ডিএমপির পশ্চিম শাখায় কর্মরত পুলিশ সদস্য মো. হাফিজুর রহমান ও তার চাচি ফেরদৌসী বেগম মোজ্জামেলের কাছে থেকে জোড়পূর্বক টাকাগুলো ছিনিয়ে নেন। সন্ধ্যায় মোজ্জামেল হক থানায় অভিযোগ করেন। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশ অভিযান চালায়। রাতভর কয়েক দফায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য মো. হাফিজুর রহমানের কাছ থেকে ২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ও ফেরদৌসীর কাছ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মো.সুরুজ্জামানের দুই ছেলে ফারুক আহম্মেদ, মারুফ আহম্মেদ ও তার ভাইয়ের ছেলে সেলিম মিয়াকে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাদের বিরুদ্ধে কোন অপরাধ না থাকায় তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় পুলিশ সদস্য হাফিজুর ও ফেরদৌসীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। রাতেই মোজ্জামেল হক বাদী হয়ে এ দুইজনের বিরুদ্ধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন।
তবে গ্রেফতারের পর ফেরদৌসী বেগম বলেন, মোজ্জামেল আমার বাড়ি খালি পেয়ে হঠাৎ আমার শরীরে হাত দেয়। আমি চিৎকার দিলে হাফিজুরসহ এলাকাবাসী ছুটে আসেন। পরে তার কাছে থাকা টাকা-পয়সা সবাই ছিনিয়ে নিয়েছে। পুলিশের কাছে সেই টাকা ফিরিয়ে দিয়েছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যর কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনও কিছু না বলে হাত জোড় করে ক্ষমা চান।
মোজ্জামেল হক বলেন, ওই নারী সম্পের্কে আমার খালোত বোন হয়। বৃষ্টির কারণে তার বাড়িতে গিয়েছি। আমার কাছে খননযন্ত্র কিনতে পাঁচ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ছিল। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা উদ্ধার করেছেন। এ ব্যাপারে আমি নালিতাবাড়ী থানায় মামলা করেছি। তবে ওই নারী আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা সত্য নয়।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম ফসিহুর রহমান বলেন, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ও ওই নারীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদেরকে বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
হাকিম বাবুল/আরএআর/আরআইপি