অভিযানের প্রতিবাদে শনিবার দুই ঘণ্টা বন্ধ থাকবে টেরিবাজার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০৬:১৮ পিএম, ০১ জুন ২০১৮

ঈদকে সামনে রেখে চোরাচালানবিরোধী অভিযানে ‘হামলা ও লুটপাটের’ ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল শনিবার (২ জুন) চট্টগ্রাম নগরের টেরিবাজারের সব মার্কেট দুই ঘণ্টা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

শুক্রবার দুপুরে জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহমদ হোসাইন। তিনি জানান, টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে কার্যকরী পরিষদ, উপদেষ্টা ও পৃষ্টপোষক পরিষদের এক জরুরি যৌথ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

আহমদ হোসাইন বলেন, সভায় সর্বসম্মতভাবে আগামী শনিবার (২ জুন) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত টেরিবাজার এলাকার সব দোকানপাট বন্ধ রেখে ধর্মঘট ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ মানববন্ধন থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল হকের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, মো. আলী সিআইপি, দোকান মালিক সমিতির চট্টগ্রামের সভাপতি ছালেহ আহমদ সোলেমান, সিনিয়র সহ-সভাপতি মুহাম্মদ শাহাব উদ্দিন, শপ ওনার্সের সভাপতি আবুল কাশেম, ওসমান গণি চৌধুরী, শামসুল আলম, আহমদ কবির দুলাল, মো. ইদ্রিস, মো. ইসমাইল, মো. ইলিয়াস, আবদুল হান্নান, বেলায়েত হোসেন প্রমুখ।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে টেরিবাজারে অভিযানে যায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর, র্যাব এবং কোস্টগার্ডের যৌথ দল। সেখানকার ‘মনেরেখ’, ‘স্টারপ্লাস’ ও ‘মেগামার্ট’ নামের তিনটি দোকানে অভিযান চালিয়ে এই যৌথ দল বিপুল পরিমাণ পোশাক জব্দ করে। মোট ৩৫ লাখ টাকা মূল্যমানের শাড়ি ও থ্রিপিস জব্দ করা হয় বলে কোস্ট গার্ড জানিয়েছে।

তবে এর আগে ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে পড়তে হয় যৌথ দলকে। এরপর কয়েকশ দোকানের মালিক-কর্মচারী সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটার পাশাপাশি ফাঁকা গুলি ছোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ctg-2

আ.লীগ নেতা সুজনের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে ক্যাব

নগরের টেরিবাজারে কাপড়ের দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান বন্ধে নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম নগর ও বিভাগীয় নেতৃবৃন্দ।

এক বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘রমজানে কাপড়ের মাকের্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে কোটি কোটি টাকার বিদেশি অবৈধ কাপড় ও পণ্যসামগ্রী জব্দ করেছে। এর জন্য ক্ষমতাসীন দলের নেতা হিসেবে এ ধরনের অভিযানকে স্বাগত জানানো দরকার ছিল।

তারা আরও বলেন, চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী জীবত থাকাকালীন খাদ্যে ভেজাল, নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য ও কাপড়ের বাজারে মূল্যবৃদ্দি নিয়ে সোচ্চার ছিলেন। কিন্তু দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি ও ভেজালের ছড়াছড়ি হলেও বর্তমান সময়ে সরকারি-বিরোধী দল কোনো পক্ষ থেকে মূল্যসন্ত্রাসী ও খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে কোনো উচ্চবাচ্য পাওয়া না, এটা খুবই দুঃখজনক। সে কারণে রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের জন্য রাজনীতি করছে? নাকি গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীকে সুবিধা প্রদানের জন্য রাজনীতি করছে, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ দেখা দিচ্ছে।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান প্রমুখ।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে (৩১ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন রমজানে কাপড়ের মার্কেটে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান স্থগিত রাখার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।

জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।