মৃত্যুর আগে পানি খেতে চেয়েছিল মুক্তামণি
বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার মুক্তামণি মৃত্যুর আগে পানি খেতে চেয়েছিল। তবে পানি আনার আগেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে আলোচিত এই মেয়েটি।
বুধবার সকাল ৮টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের নিজ বাড়িতেই মৃত্যু হয় ১২ বছর বয়সী মুক্তামণির।
মুক্তামণির দাদি সালেহা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, সকালে মুক্তামণি আমার কাছে পানি খেতে চেয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পানি খেতে পারেনি। পানি নিয়ে যাওয়ার আগে মুক্তামণি মারা যায়। তখন মুক্তার বাবা ইব্রাহিম ও মা আসমা বেগম পাশে বসে ছিল।
গত ২০১৭ সালের ৯ জুলাই ‘লুকিয়ে রাখতে হয় মুক্তাকে’ শিরোনামে জাগো নিউজে সংবাদ প্রকাশের পর তাকে নিয়ে সারাদেশে আলোচনা শুরু হয়। মুক্তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম। পরে তাকে ১১ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরপর প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়ার পর তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়ারও উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে সেখানকার চিকিৎসকরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুক্তামণির হাত দেখে আঁতকে ওঠেন। একইসঙ্গে হাত অপারেশনের জন্য অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা দেশেই অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কয়েক দফা অপারেশনও করেন। তবে হাতের কোনো পরিবর্তন আনতে পারেননি।
২২ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে আসা হয় মুক্তামণিকে। দীর্ঘ ৬ মাস চিকিৎসা সেবার পর এক মাসের ছুটিতে বাড়িতে আসে মুক্তামণি। তবে পরবর্তীতে মুক্তামণি আর ঢাকায় যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে। একই সঙ্গে মুক্তামণির অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় ঢাকায় যেতে নিরুৎসাহী হয়ে পড়ে তার পরিবারও।
গত ১৯ মে মুক্তামনি জাগো নিউজকে বলেছিল, আমি আর সুস্থ হব না। ডাক্তার স্যাররা অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আমাকে সুস্থ করতে পারেননি। জানি না কতদিন এভাবে বেঁচে থাকব আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।
আকরামুল ইসলাম/আরএআর/জেআইএম