‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৯ মাদক ব্যবসায়ী নিহত

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:২৪ এএম, ২৩ মে ২০১৮

আজও সারাদেশে পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ৯ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত এসব বন্দুকযুদ্ধে কুষ্টিয়ায় ২, কুমিল্লায় ১, ফেনীতে ১, জামালপুরে ১, রংপুরে ১, ঠাকুরগাঁওয়ে ১, লালমনিরহাটে ১ ও গাইবান্ধায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

জানা গেছে, কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ফটিক ওরফে গাফফার (৩৭) ও লিটন শেখ (৪০) নামে দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি এ ঘটনায় তাদের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ অস্ত্র, গুলি ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে।

মঙ্গলবার রাত একটার দিকে কুমারখালী উপজেলার লাহিনীপাড়ার গড়াই নদীর পাড় সংলগ্ন ব্রিজের নিচে ও ভেড়ামারা উপজেলার হাওয়াখালী ইটভাটা মাঠে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এ সময় গড়াই নদীর ব্রিজের নিচ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, ৭শ পিস ইয়াবা ও ৫০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। আর ভেড়ামারার ইটভাটা মাঠ থেকে একটি এলজি, তিন রাউন্ড গুলি, ৫০০ পিস ইয়াবা ও দুই গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করেছে।

কুমিল্লাতেও পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নুরুল ইসলাম ইছা (৩৫) নামের এক তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে আদর্শ সদর উপজেলার টিক্কারচর ব্রিজসংলগ্ন গোমতী বাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার বিকেলে ইসাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।

পুলিশ জানায়, বিশেষ অভিযানে ইসাকে গ্রেফতারের পর তার দেয়া তথ্য অনুসারে সহযোগীদের আটক এবং মাদক উদ্ধারে পুলিশ অভিযান শুরু করে। গভীর রাতে টিক্কারচর ব্রিজসংলগ্ন এলাকায় গেলে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে ইছা আহত হন। কুমেক হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। ইছার বিরুদ্ধে মাদক আইনে ৭টি মামলা রয়েছে।

এদিকে ফেনীতে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ফারুক (৩৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে শহরতলীর দাউদপুর কালিপাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরতলীর ওই এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এসময় ঢাকামুখী একটি প্রাইভেটকার নিয়ে সন্দেহ হলে র‌্যাব গাড়ি থামাতে সংকেত দেয়। কিন্তু গাড়ি থেকে গুলি ছুড়লে র‌্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে চালকের আসনে থাকা ফারুক গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে উদ্ধার করে ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। র‌্যাব প্রাইভেটকারে তল্লাশি চালিয়ে ২০ হাজার পিস ইয়াবা, একটি দেশীয় বন্ধুক, চার রাউন্ড গুলি, চার রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করে।

জামালপুরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ অজ্ঞাত এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এতে ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

বুধবার ভোরে জামালপুর শহরতলীর ছনকান্দা মাদরাসা বালুঘাট এলাকায় মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালালে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে এক মাদক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়। এ সময় অন্য মাদক ব্যবসায়ীরা ব্রহ্মপুত্র নদ পার হয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে ১ হাজার পিস ইয়াবা, একটি পিস্তল ও ৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত মাদক ব্যবসায়ীর পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভাতারমাড়ী ফার্ম নামক স্থানে বালিয়াডাঙ্গী ও পীরগঞ্জ থানার যৌথ অভিযানে পুলিশের গুলিতে আলতাফুর নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বুধবার ভোর ৪টার দিকে সশস্ত্র মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পুলিশের এ বন্দুকযুদ্ধ হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ২ পুলিশ সদস্য।

রংপুরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শাহীন নামে (৪৫) এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে নগরীর হাজীরহাট ব্রিজ এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি পিস্তল ও ১২৯ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্র্কেল-এ) সাইফুর রহমান বলেন, রাত ২টার দিকে হাজিরহাট ব্রিজ এলাকায় মাদক বেচাকেনা করছিলেন শাহীন ও তার লোকজন। এ সময় পুলিশের টহল দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে ওই এলাকায় পৌঁছালে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে তারা। এসময় পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই শাহীন মারা যান। নিহত শাহীনের বিরুদ্ধে থানায় মাদক ও ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে।

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রাজু মিয়া নামের এক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই র‌্যাব সদস্য।

বুধবার ভোরে উপজেলার মহদিপুর ইউনিয়নের বিশ্রামগাছি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, গোলাবারুদ এবং বিপুল পরিমাণ গাঁজা জব্দ করেছে গাইবান্ধা র‌্যাব-১৩ ক্যাম্পের সদস্যরা। রাজু মিয়ার বিরুদ্ধে পলাশবাড়ী থানায় একাধিক মাদক ও অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে।

লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নুর আলম এশা (৪০) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বুধবার রাত ৩টায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ধরলা সেতুর কাছে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ২০ কেজি গাঁজা, ৫০ বোতল ফেনসিডিল, ৬টি রামদা ও কিছু গুলির খোসা উদ্ধারের দাবি করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, মাদকের একটি চালান লালমনিরহাটে ঢুকছে এমন খবর পেয়ে পুলিশের টহল দল ওই এলাকায় পৌঁছালে গুলি ছোড়ে মাদক ব্যবসায়ীরা। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই নুর আলম এশার মৃত্যু হয়। নিহত এশার বিরুদ্ধে থানায় মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।