মুক্তামণির আশা ছেড়ে দিয়েছে পরিবার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা
প্রকাশিত: ০১:২৭ পিএম, ১৯ মে ২০১৮

‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়ার সময় মুক্তার হাতে টাইট ব্যান্ডেজ করে দেয়া হয়েছিল। এটা মাঝে মাঝে খুলে পরিষ্কার করার নিয়মও দেখিয়ে দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এখন দুইদিন পর পর পরিষ্কার না করলে হাতটিতে দুর্গন্ধ হয় আবার বেশিক্ষণ খুলে রাখলেও হাত অনেক ফুলে যায়। মনে হয় পুরো হাতটি পচে গেছে। আমরা মুক্তামণির আশা ছেড়ে দিয়েছি। এখন আল্লাহ ভরসা।’কথাগুলো বলছিলেন মুক্তামণির বাবা ইব্রাহিম গাজী।

তিনি আরও বলেন, ডাক্তারদের চেষ্টা আর আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি ছিল না। প্রধানমন্ত্রীও মুক্তার ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছেন। সবাই আমার মেয়েকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছেন। এতে দুনিয়ার মানুষের আর কোনো হাত নেই।

এদিকে নিয়মিত মুক্তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক ডা. সামন্ত লাল সেন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে মুক্তার ছবিও দেখছেন তারা। ছবি দেখে হাতের অবস্থা খারাপ বলে জানিয়েছেন সেখানকার চিকিৎসকরা।

মুক্তামণির হাত আগের থেকে অনেক ফুলে গেছে। ব্যান্ডেজ খুলে পরিষ্কার করার সময় হাত থেকে বেরিয়ে আসছে বড় বড় পোকা। তার সুস্থতার ভরসা রাখতে পারছেন না চিকিৎসকরাও। চিকিৎসকের নির্দেশমতো বন্ধ আছে সব ধরনের ওষুধ সেবন। হাতটি কয়েকগুণ ফুলে যাওয়ায় দুই-এক ঘণ্টা ছাড়া সারাদিনই শুয়ে থাকতে হয় তাকে। দুর্গন্ধ বেড়েছে অনেক বেশি। রোগের বিস্তার এখন হাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বুক, পেট আর পায়েও ছড়িয়ে গেছে।

২০১৭ সালের ২২ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে আসা হয় মুক্তামণিকে। প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়ার পর তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়ারও উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে সেখানকার চিকিৎসকরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুক্তামণির হাত দেখে আঁতকে ওঠেন। একইসঙ্গে হাত অপারেশনের জন্য অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা দেশেই অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কয়েক দফা অপারেশনও করেন। তবে হাতের কোনো পরিবর্তন আনতে পারেননি।

অবশেষে দীর্ঘ ৬ মাস চিকিৎসা সেবার পর এক মাসের ছুটিতে বাড়িতে আসে মুক্তামণি। তবে পরবর্তীতে মুক্তামণি আর ঢাকায় যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে। একইসঙ্গে মুক্তামণির অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় ঢাকায় যেতে নিরুৎসাহী হয়ে পড়ে তার পরিবারও।

জাগো নিউজকে মুক্তামণি বলে, আমি আর সুস্থ হব না। ডাক্তার স্যাররা অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আমাকে সুস্থ করতে পারেননি। জানি না কতদিন এভাবে বেঁচে থাকব আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।

আকরামুল ইসলাম/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।