মধ্যরাত থেকে বঙ্গোপসাগরে মৎস্য শিকার বন্ধ
বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে মাছের প্রজনন ও সর্বোচ্চ সংরক্ষণের স্বার্থে আজ শনিবার মধ্যরাত (রাত ১২টা) থেকে বঙ্গোপসাগরে মৎস্য শিকার নিষিদ্ধ হচ্ছে। এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে টানা ৬৫ দিন অর্থাৎ ৩ জুলাই পর্যন্ত।
শনিবার (১৯ মে) সকালে বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ মৎস অধিদফতরের উপ পরিচালক কাজী শামস আফরোজ।
তিনি জানান, সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও সংরক্ষণের জন্য বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের ইকোনমিক জোনে (৩ থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল) ৬৫ দিন মাছ আহরণ নিষিদ্ধ থাকবে। ফলে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের ইকোনমিক জোনে আগামী ৬৫ দিন আর কেউ মাছ ধরতে পারবেন না। সামুদ্রিক মৎস্য অধ্যাদেশ ১৯৮৩-এর পার্ট ১১ রোলস ৫৫ (২) বি-এর ক্ষমতাবলে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
মৎস্য অধিদফতরের চট্টগ্রাম অফিস সূত্রে জানা যায়, আগামী ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে সব ধরনের বাণিজ্যিক ট্রলারের মাধ্যমে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। সারা দেশে উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ৬৮ হাজারের মতো ছোট ছোট মাছ ধরার নৌযান রয়েছে। সেগুলোও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে। কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
সূত্র জানায়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২০১৫ সালের ২০ মে মেরিন ফিশারিজ অর্ডিন্যান্সের গেজেট প্রকাশ করে। গেজেটে সমুদ্রপার থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত সীমাকে অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ওই গেজেটের ৫৫ ধারা অনুযায়ী, ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মাছ ও চিংড়ি আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়। তবে ওই বছরের ৯ জুলাই গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে রিট আবেদন করা হলে হাইকোর্ট রুল জারি করে গেজেট স্থগিত করেছিলেন।
পরে ২০১৭ সালের ১৫ মে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল খারিজ করে দেন।
উল্লেখ্য, এক নটিক্যাল মাইল হলো প্রায় ১.১৫০৮ মাইলের সমান। অন্যভাবে বলা যায়, এক মাইলে ১৭৬০ গজ, আর এক নটিক্যাল মাইলে ২০২৫ গজ ।
গত বেশ কিছু দিন যাবত সাগর উত্তাল থাকায় এমনিতেই মাছ শিকারে বেকায়দায় ছিলেন জেলেরা। এখনও বহু ফিশিং ট্রলার ও নৌকা উপকূলে অবস্থান করছে। এর মধ্যে টানা ৬৫ দিনের মাছ শিকারে নিষিদ্ধ সময় শুরু হতে যাওয়ায় জেলেদের কষ্ট আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আবু আজাদ/এসআর/এমএস