শহীদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এবার তিন মামলা
নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় দায়ের করা মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া দুই আওয়ামী লীগ নেতা ঘটনার প্রায় ১৫ মাস পর পাল্টা মামলার আবেদন করেছেন। মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াছিন মিয়া ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আমিনুল হক রাজুর দায়ের করা পৃথক তিন মামলায় নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের ভাই আবদুস সালাম, শ্বশুর শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদ চেয়ারম্যানসহ বেশ কয়েকজনকে বিবাদী করা হয়েছে।
সাত খুনের পর থেকে বিবাদীদের হুমকিতে পলাতক থাকার কারণে মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে উল্লেখ করে নারায়ণগঞ্জ আদালতে করা হয়েছে মামলার আবেদন।
মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৃথকভাবে এ তিনটি মামলার আবেদন করা হয়। তবে বৃহস্পতিবার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহসিন মিয়া বিষয়টি সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
আদালত ওই তিনটি মামলার আবেদন গ্রহণ করে আগামী ৩০ আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে দায়ের করা একটি মামলার (সি আর মামলা নং-৬৭/২০১৫) বাদী সিদ্ধিরগঞ্জ থানা সেচ্ছাসেবক লীগের আমিনুল হক ভূইয়া রাজু। এ মামলার বিবাদীরা হল- আবদুস সালাম, রফিকুল ইসলাম মিন্টু, মামুন, সাইদুল, রনি, কবির হোসেন, বাবুল মিয়া, মোহাম্মদ আলী, জহিরুল ইসলামসহ ৫০/৬০ জন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিবাদীরা মিলে ২০১৪ সালের ১ মে রাজুর বাড়িতে হামলা করে সাড়ে তিন লাখ টাকা লুটপাট করে। হাজী ইয়াছিন মিয়ার একটি মামলায় (সি আর মামলা নং-৬৮/২০১৫) আসামিরা হল- সেভেন মার্ডারে নিহত নজরুলের শ্বশুর শহিদুল ইসলাম, নজরুলের ভাই আবদুস সালাম, রফিকুল ইসলাম মিন্টু, নজরুলের শ্যালক মামুন, সাইদুল, রনি, কবির হোসেন, বাবুল মিয়া, মোহাম্মদ আলী, জহিরুল ইসলাম ও মনির হোসেন। এতে অজ্ঞাত আসামি করা হয় আরো ২০/২৫ জনকে।
ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৪ সালের ১ মে আসামিরা ইয়াসিনের বাড়িতে হামলা করে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ছবি ভাঙচুরসহ ৪/৫টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় তার আলমারিতে রক্ষিত ১৫ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়ে যায় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। হাজী ইয়াছিন মিয়ার অপর মামলার (সি আর মামলা নং-৬৯/২০১৫) বিবাদী করা হয়েছে নিহত নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলামকে।
অন্য আসামিরা হলো সেভেন মার্ডারে নিহত নজরুলের ভাই আবদুস সালাম, নজরুলের শ্যালক সাইদুল, মামুন, শহিদুল ইসলামের সহযোগী রফিকুল ইসলাম মিন্টু ও নিহত নজরুলের ভাগীনা রনি। এতে আসামি করা হয়, অজ্ঞাত আরো ২০/২৫ জনকে।
মামলার আবেদনে হাজী ইয়াছিন মিয়া অভিযোগ করেন, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে অপহরণের পরেই বিবাদীরা গিয়ে ইয়াছিনের কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে।
অন্যথায় সাত খুনের মামলায় আসামি করার হুমকি দেয়। কিন্তু টাকা দিতে রাজী না হওয়ায় ২৮ এপ্রিল ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করে ইয়াসিনকে দ্বিতীয় আসামি করা হয়। পরে বিবাদীরা ৩০ এপ্রিল সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাকে মেসার্স সামস ফিলিং স্টেশনে হামলা করে ২০ লাখ টাকা লুটসহ ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি করে। এরপর থেকে এলাকাতে ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করে আসামিরা।
হোসেন চিশতী সিপলু/এআরএ/এমআরআই