সুরাইয়ার হতাশা
ভাঙাচোরা একটি মাত্র ঘর। সেটিতেই মা-বাবা ও ভাই-বোন মিলে বসবাস সুরাইয়া ইসলামের। সংসারের অভাব-অনটনের মধ্যেও সফলতা ছিনিয়ে এনেছে সুরাইয়া।
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় সুরাইয়া ইসলাম এ প্লাস পেয়েছে। ভালো ফলাফল করেও পরবর্তী শিক্ষাজীবন নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন তার বাবা-মা। কারণ তার পরবর্তী লেখাপড়ার খরচ দরিদ্র পরিবারটির পক্ষে বহন সম্ভব নয়।
সুরাইয়ার বাবা ইছাহাক খান উপজেলা সদর বাজারের একজন দোকানদার। তার মা আনোয়ারা বেগম একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। পরিবারে চার বোনের মধ্যে সুরাইয়া ইসলাম সেজ। সে ভবিষ্যতে একজন বিসিএস ক্যাডার অফিসার হতে চায়। কিন্তু বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে দারিদ্রতা।
সুরাইয়া ইসলাম জানায়, ছোটকাল থেকেই দারিদ্র্যতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সে লেখাপড়া চালিয়ে এসেছে। তার স্কুল জীবনে কোনোদিন প্রাইভেট পড়া বা ভালো কোনো গাইড বই কেনার সুযোগ হয়নি তার। শুধু নিজের একক চেষ্টায় ঘরে বসে অধ্যায়ন করার ফলেই এসেছে তার এ সাফল্য।
সুরাইয়া জানায়, ভালো রেজাল্ট করলেও এখন কলেজে ভর্তি অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। টাকার অভাবে হয়তো কলেজে ভর্তি হতে পারবো না। এখানেই থেমে যেতে হতে পারে।
সুরাইয়ার বড় বোন মারজান আক্তার জানান, সুরাইয়া ছোট বেলা থেকেই খুব মেধাবী ছাত্রী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। একটি ভালো জামা কাপড় এমনকি একটি প্রাইভেটও পড়াতে পারিনি। সুরাইয়া নিজের চেষ্টাতেই এ পর্যন্ত এসেছে।
আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী আবু সেলিম জানান, সুরাইয়া অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী। সুরাইয়ার বাবা একজন দোকানদার। ওই দোকান থেকে রোজগার যা হয় তা দিয়ে তাদের সংসারই চলে না। সুরাইয়া খুব কষ্ট করে এ সাফল্য অর্জন করেছে। তিনি জানান, স্কুলের সব শিক্ষকই সুরাইয়াকে সব সময় লেখাপড়ার বিষয়ে সহযোগিতা করেছে।
এমএএস/এমএস