কিশোরগঞ্জে ৪ মাসেই বজ্রপাতে নিহত ১২

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কিশোরগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৯:১৭ এএম, ০৫ মে ২০১৮
প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জে গত চার বছরে বজ্রপাতে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে গেল ১৬ মাসেই এ জেলায় বজ্রপাতে মারা গেছেন ৩৯ জন। বজ্রপাতে মত্যুর ঘটনা বেশি ঘটছে জেলার হাওর অধ্যুষিত উপজেলাগুলোতে। বিশেষ করে হাওরের মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলী ও করিমগঞ্জে বজ্রপাতে বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে।

২০১৪ ও ২০১৫ সালে বজ্রাঘাতে মাত্র ২ জন করে মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও ২০১৬ সালে হঠাৎ করে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮ জনে। আর চলতি বছরের ৪ মে পর্যন্ত মাত্র চার মাসে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বজ্রপাতে মারা গেছে ১২ জন। ফলে দিন দিন মানুষের মধ্যে আতঙ্কও বাড়ছে।

কিশোরগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৭ই মে বজ্রপাতকে ‘দুর্যোগ’ হিসেবে ঘোষণা করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। বজ্রপাতে নিহতের পরিবার ও আহতদের সরকারিভাবে অনুদান সহায়তাও দেয়া হচ্ছে।

সরকারি হিসাব মতে, ২০১৪ সালের জুন মাসে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায় বজ্রপাতে ২ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৫ সালে মিঠামেইন ও পাকুন্দিয়ায় বজ্রপাতে মারা যায় ২ জন। তবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ২০১৬ সালে। ওই বছর জেলা সদরসহ হাওর ও আংশিক হাওর অধ্যুষিত ৮ উপজেলায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়। আর ২০১৭ সালে কিশোরগঞ্জের ৭ উপজেলায় ৯ জন বজ্রপাতে মারা যায়।

এদিকে এক বেসরকারি পরিসংখ্যানে জানা গেছে, ২০১১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৮ বছরে জেলার ১৩টি উপজেলায় বজ্রপাতে মারা গেছেন ১২০ জন। এর মধ্যে ইটনায় উপজেলায় বজ্রপাতে মোট ২৪ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এরপরই নিকলী উপজেলায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে ১৯ জনের। এছাড়া ওই সময় মিঠামইন উপজেলায় ১৫ জন, অষ্টগ্রামে ১৪ জন, করিমগঞ্জে ১০ জন, বাজিতপুরে ৯ জন, তাড়াইলে ৭ জন, কটিয়াদীতে ৬ জন, সদর উপজেলায় ৫ জন, পাকুন্দিয়ায় ৪ জন, হোসেনপুরে ৩ জন, কুলিয়ারচরে ২ জন এবং ভৈরবে ২ জনের মৃত্যু হয়।

হাওর অধ্যুষিত এই জেলায় বৃষ্টির সঙ্গে নিয়মিত বজ্রপাতে এই হতাহতের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকায় এলাকায় আতঙ্ক বাড়ছে। বিশেষ করে ধানকাটা মৌসুমে বজ্রপাত বেশি হওয়ায় হাওরের হাজার হাজার কৃষক ও কৃষি পরিবারে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

কিশোরগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মোকাররম হোসেন জানান, বজ্রপাত থেকে রক্ষায় গণসচেতনতামূলক কর্মসূচি হিসেবে এলাকায় মাইকিং করে প্রচারণা, লিফলেট বিতরণ, মসজিদে আলোচনা ও গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক করা হচ্ছে।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বজ্রপাত প্রতিরোধ কর্মসূচির আওতায় কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় এলাকায় তালগাছ রোপন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এ জেলায় ১৬ হাজার তালগাছের চারা লাগানো হয়েছে।

নূর মোহাম্মদ/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।