রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে জোরালো ভূমিকা রাখবে ওআইসি
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত সভ্যতার কলঙ্ক উল্লেখ করে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপরাশনের (ওআইসি) প্রতিনিধিরা বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক অন্য সংস্থার পাশাপাশি জোরালো ভূমিকা রাখবে ওআইসি। কী এবং কিভাবে সেসব ভূমিকা পালন করা হবে সেই বিষয়ে অনুষ্ঠিতব্য ওআইসির ৪৫তম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। তাই সম্মেলনে বসার আগেই সরেজমিনে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি ঘুরে দেখলেন তারা।
শুক্রবার দুপুরে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন ওআইসির সহকারী মহাসচিব হাসমি ইউছুফ।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রতিনিধি দলটি প্রথমে তানজিমার খোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যান। সেখান থেকে কুতুপালং ডি ব্লক পরিদর্শন করেন। সেখানে তারা নিপীড়িত, নির্যাতিত রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বলা কথাগুলো দোভাষী হিসেবে উপস্থাপন করেন কক্সবাজারের ইউএনএইচসিআর’র কর্মকর্তা হাজেরা খানম। এরপর বেলা একটার দিকে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রতিনিধি দল।
এর আগে শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টায় ওআইসির প্রতিনিধিদের বহনকারী বিশেষ বিমানটি কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এরপরই ওআইসি প্রতিনিধি দল কলাতলীর একটি অভিজাত হোটেলে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা ও আরআরআরসি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বৈঠক চলে। বৈঠক শেষে তারা সড়ক পথে ক্যাম্প পরিদর্শনে যান। বৈঠকে ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে অংশ নিতে আসা ৩৮ দেশের মন্ত্রী ও ৮ পররাষ্ট্র সচিবসহ ৬৮ দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিল।
ওআইসি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ.এইচ মাহমুদ আলী এবং পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক। বিকেলেই প্রতিনিধি দলটির ঢাকার উদ্দেশে একই বিমানে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বৈঠকে রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতি ওআইসি প্রতিনিধিদের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের গড়িমসির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ এপ্রিল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ও শুক্রবারের ওআইসি প্রতিনিধি দলের এ সফরকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে বাংলাদেশ সরকার। এ সফরকে অর্থবহ করতে দু'পরিদর্শক দলের কাছে রোহিঙ্গা সংক্রান্ত বর্তমান পরিস্থিতির বিস্তারিত তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করাসহ বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম।
উল্লেখ্য, ৫ ও ৬ মে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে ওআইসি’র ৪৫তম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন। ওআইসি জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এবারের বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট অন্যতম এজেন্ডা হিসেবে আলোচিত হবে। সম্মেলন শুরুর আগে ওআইসরি অন্তর্ভুক্ত দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের দেখতে কক্সবাজার যান।
সায়ীদ আলমগীর/এফএ/এমএস