পটুয়াখালী গণহত্যা দিবস আজ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পটুয়াখালী
প্রকাশিত: ১২:১৫ পিএম, ২৬ এপ্রিল ২০১৮

স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার ঠিক একমাস পর ২৬ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পটুয়াখালী শহরে পাকহানাদার বাহিনী অতর্কিত বিমান হামলা চালায়। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও শহীদদের গণকবরসহ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলো সংরক্ষণ ও এলাকা ভিত্তিক ইতিহাস সংরক্ষণে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ও সম্মান থাকলেও পটুয়াখালীর শহীদ পরিবারের সদস্যরা আজও তা থেকে বঞ্চিত।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল সকালে হঠাৎই পটুয়াখালীর আকাশে হানা দেয় পাক বাহিনীর দুইটি জঙ্গি বিমান। ক্রমাগত শেলিং করে গুড়িয়ে দেয় টিএন্ডটি টাওয়ারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। অতর্কিত হামলায় দিশেহারা হয়ে পড়ে শহরবাসী। কিছুক্ষণ পর পশু হাসপাতাল সংলগ্ন মাঠে দুইটি হেলিকপ্টারে নামে ছত্রীসেনা। তাদের প্রথম আক্রমণের শিকার হয় মাদবর বাড়ির নিরীহ মানুষ। সেখানে ক্রমাগত গুলি চালিয়ে হত্যা করে নারী ও শিশুসহ ১৯ জনকে। এরপর বিটাইপ এলাকায় ছয় জন আনসার ও একজন তথ্য কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করে পাকসেনারা। এতে প্রায় সহস্রাধিক নিরিহ মানুষ ওই দিন প্রাণ হারায়। পরবর্তীতে শহরের পুরানবাজার এলাকায় লুটপাট করে অগ্নি সংযোগ করা হলে আতঙ্কিতরা লোহালিয়া নদী সাঁতরে প্রাণ বাঁচে। কিন্তু শহর পরিণত হয় ধ্বংসস্তুপে। টানা তিন দিন তিন রাত ধরে জ্বলে আগুন।

পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর হোসেন বলেন, সেই দিন সকালে পাকবাহিনীর নির্মমতায় প্রাণ দেয় সহস্রাধিক নিরীহ মানুষ। নির্বিচারে চলে লুণ্ঠন ও ধ্বংসযজ্ঞ।

শহীদ পরিবারের সদস্য নুরু মাতুব্বুর বলেন, দেশ স্বাধীনের ৪৫ বছর কেটে গেলেও শহীদ পরিবারগুলোর কোন স্বীকৃতি মেলেনি। মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি ৭১ সালে পাক বাহিনীর হাতে শহীদ হওয়ায় পরিবারগুলোকে শনাক্ত করে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি তাদেরকেও সরকারি সাহায্য সহযোগিতা প্রয়োজন।

jagonews24

পটুয়াখালী প্রেসক্লাব সভাপতি স্বপন ব্যনার্জী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পটুয়াখালী জেলার গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাস থাকলেও দীর্ঘ দিনেও তা লিপিবদ্ধ করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে নতুন প্রজন্মের কাছে তা অনেকটাই অজানা। এ কারণে সরকারিভাবে মুক্তিযুদ্ধের এলাকা ভিত্তিক ইতিহাস সংরক্ষণে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক ড.মো. মাছুমুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলো সংরক্ষনের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের এলাকা ভিত্তিক ইতিহাস সংরক্ষনে উদ্যোগ নেয়া হবে।

মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/আরএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।