জেএসএস-ইউপিডিএফ দ্বন্দ্বে ঘরছাড়া ৪৯ পরিবার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাঙ্গামাটি
প্রকাশিত: ০১:৫৬ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০১৮

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলী এলাকার বাসিন্দা সোনাবী চাকমা তার দেড় বছরের শিশুকে নিয়ে উদ্বাস্তু জীবন যাপন করছেন। যে শিশু এখনও পৃথিবীর হালচাল সম্পর্কে কিছুই জানে না, সে কিনা এখনই প্রাণনাশের হুমকি পেয়ে বসেছে। পার্বত্য এলাকার আঞ্চলিক দলগুলোর অন্তঃকোন্দলের কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তপ্ত এ অঞ্চল।

কোন্দলের জের ধরে উপজেলার বঙ্গলতলী, সাজেক, রুপকারী, বালুখালী, ডাংগাছড়া, হাগলাছড়া, করেঙ্গাতলী ও বি-ব্লক এলাকার ৪৯টি পরিবারের প্রায় শতাধিক লোক গত ১০ এপ্রিল থেকে পার্বত্য এলাকার আঞ্চলিক দল ইউপিডিএফ (প্রসিত) দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে ও প্রাণনাশের হুমকির শিকার হয়ে ঘর ছেড়ে উপজেলা সদরের বাবুপাড়া কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছে।

jagonews24

দেড় বছরের শিশু বিদ্যা সাগর চাকমাকে কোলে নিয়ে জীবন বাঁচাতে আশ্রয় কেন্দ্রে আসা সোনাবী চাকমা বলেন, আমার স্বামী বান্টর চাকমা। তিনি পেশার একজন জুমচাষি। তিনি জেএসএস (এম এ লারমা) দলটি সমর্থন করার কারণে তাকে ইউপিডিএফ’র লোকেরা মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। আমাদের পরিবারের সকলকে মেরে ফেলবে বলেও হুমকি দিয়েছে। এমনকি আমাদের গ্রামে থাকা সকল মানুষকে তারা হুমকি দিয়েছে।

দুই বছরের শিশু অর্জুন চাকমাকে সঙ্গে নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে জীবনের নিরাপত্তার জন্য আসা পলাশি চাকমা বলেন, আমার স্বামী স্থানীয় সংগঠন জেএসএস (এম এ লারমা) সমর্থন করাই ইউপিডিএফ’র (প্রসিত) নেতাকর্মীরা মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বেশ কয়েকদিন ধরে। তাই এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছি।

তিনি বলেন, ঘরবাড়ি ছেড়ে এখানে থাকতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমরা চাই সরকার যাতে আমাদেরকে নিরাপত্তা দেয়। তাহলে আমরা আমাদের নিজ নিজ ঘরবাড়িতে ফিরে গিয়ে থাকতে পারবো।

এ বিষয়ে ইউপিডিএফ (প্রসিত) সংগঠক মাইকেল চাকমা বলেন, তারা এটা নাটক সাজিয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ফায়দা লোটার জন্য এসব করছে তারা।

jagonews24

তিনি বলেন, তারা আমাদের দলের অনেককে উচ্ছেদ করেছে, উদ্বাস্তু করে রেখেছে। তাই তারা ভয়ে তাদের পরিবারকে এখানে সরিয়ে রেখেছে এবং অন্য কিছু মানুষকে একত্র করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাচ্ছে।

বাঘাইছড়ি উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো. নাদিম সারোয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কিছু লোক গত বেশ কয়েকদিন ধরে কমিউনিটি সেন্টারে এসে আশ্রয় নিয়েছে। ইতোপূর্বে তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত শেষে আসল কারণটি জানতে পারবো। তবে তারা বাংলাদেশের নাগরিক, সে হিসেবে আমরা তাদেরকে প্রয়োজন অনুসারে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

এফএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।