টাঙ্গাইলে প্রাথমিকে ৮’শ শিক্ষকের পদ শূন্য

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ০১:৪২ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০১৮

টাঙ্গাইলের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় দূরাবস্থা বিদ্যমান রয়েছে। শিক্ষা কার্যক্রমের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায়ই এ জেলায় ৮৩৮ জন শিক্ষকের পদ শূন্য। চলমান এ অবস্থায় ৫৭৪ জন প্রধান শিক্ষক আর ২৬৪ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এ শূন্যতার ফলে এ জেলা শিশু শিক্ষার্থীরা শিক্ষা জীবনের শুরুতেই যেমন মানসম্মত আর প্রয়োজনীয় শিক্ষা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তেমনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। তবে দীর্ঘদিন যাবৎ নিয়োগ আর পদোন্নতি না থাকায় এ সমস্যা হয়েছে বলে দাবি করছে জেলার প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১ হাজার ৬০৭টি। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদশূণ্য রয়েছে ২৮৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আর ২৯০টি সদ্য জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া সহকারী শিক্ষক পদশূণ্য রয়েছে ১৬৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৯৪টি সদ্য জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদশূণ্য প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ৩৪, ঘাটাইল উপজেলায় ৬৫, সখীপুর উপজেলায় ৪৫, গোপালপুর উপজেলায় ৫১, বাসাইল উপজেলায় ৪৩, দেলদুয়ার উপজেলায় ৪৪, মির্জাপুর উপজেলায় ৬৯, কালিহাতী উপজেলায় ৬৯, মধুপুর উপজেলায় ৩৫, নাগরপুর উপজেলায় ৫৪, ভূঞাপুর উপজেলায় ৩৬ আর ধনবাড়ী উপজেলায় ২৯টি। এছাড়াও সহকারি শিক্ষকের পদশূণ্য প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ৮, ঘাটাইল উপজেলায় ৪, সখীপুর উপজেলায় ৬৬, গোপালপুর উপজেলায় ৫০, বাসাইল উপজেলায় ২৮, দেলদুয়ার উপজেলায় ৪, মির্জাপুর উপজেলায় ১৬, কালিহাতী উপজেলায় ১০, মধুপুর উপজেলায় ১০, নাগরপুর উপজেলায় ৩৫, ভূঞাপুর উপজেলায় ২৭ আর ধনবাড়ী উপজেলায় ৬টি।

শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষক সংকটের ফলে মানসম্মত শিক্ষা আর মানসিক বিকাশ থেকে পিছিয়ে পরছে বিদ্যালয়ের শিশুরা। এছাড়া এ সমস্যার কারণে শিশুদের জ্ঞানশূণ্য শিক্ষা জীবনের শুরু হচ্ছে এবং বিদ্যালয়ের অনেকাংশেই স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত এ সমস্যার সমাধানের দাবি করেছেন তারা।

গোপালপুর উপজেলার শাখারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আঞ্জু আনোয়ার ময়না বলেন, ২০১৩ সাল থেকে আমাদের বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকদের পদটি শূন্য রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে বেশ কয়েকজন সহকারী শিক্ষককের পদও। বর্তমানে আমাদের প্রতিষ্ঠানে ৯ জন শিক্ষককের মধ্যে ৪ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছে। এতে আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমসহ শিক্ষা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি বিষয়টি যেন গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোজাহারুল ইসলাম মাজাহার জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের জন্য অন্যতম একটি অন্তরায়। একটি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮৩৮ শিক্ষকের পদশূন্য এটা খুবই দুঃখজনক। এতে সর্বোচ্চ সমস্যাগ্রস্ত হচ্ছে জেলার শিক্ষা কার্যক্রম।

দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষককের নিয়োগ এবং পদোন্নতি না হওয়ায় প্রাথমিকে ব্যাপক শিক্ষক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। আশা করছি সরকার দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান করবেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল আজিজ জানান, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পদশূন্য রয়েছে অতিদ্রুত ওই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের পদ পূরণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগতও করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত এ জেলার শিক্ষকের শূন্যপদতা দূর হবে।

আরিফ উর রহমান টগর/আরএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।