লিফটের সঙ্গে ছিঁড়ে পড়ল স্বপ্নও
পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে সুদূর মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন ওরা তিন জন। অনেকে জমি বিক্রি করেও গিয়েছিলেন সেখানে। কাজ করে দেশে টাকা পাঠালে পরিবারের সবাই ভালো থাকবে এই আশায়। কিন্তুু এক নিমিষে সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে তরিকুল, আজমিন ও সালাউদ্দিনের।
মালয়েশিয়ায় একটি ভবনে কাজ করার সময় লিফট ছিঁড়ে তাদের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। সোমবার বিকেল ৫টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মালয়েশিয়ায় কর্মরত অন্যান্য বাংলাদেশিরা বিষয়টি তাদের পরিবারে জানানোর পর থেকে স্বজনদের আহাজারিতে এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে স্ত্রী-সন্তানেরা। নিহত তিনজনই যশোরের সন্তান।
নিহতরা হলেন, যশোরের বেনাপোলের ধান্যখোলা গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে তরিকুল ইসলাম তরিক (৩২), শার্শার শ্যামলাগাছি গ্রামের আবু তালেবের ছেলে আজমিন হোসেন (২৬) ও ঝিকরগাছা উপজেলার ছোট-পোদেউলিয়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (৪২)।
নিহতদের স্বজনরা জানান, মালয়েশিয়ার জোহরবারু ফরেস্ট সিটিতে নির্মাণাধীন ৫০ তলা বিল্ডিংয়ে লিফট তৈরির জন্য এলোমিনিয়ামের কাজ করছিলেন তারা। ৩২ তলায় লিফটের কাজ করার সময় লিফট ছিঁড়ে তারা তিনজনই ঘটনাস্থলে মারা যান। নিহতদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য মালয়েশিয়ায় কাজ চলছে বলেও জানান স্বজনরা।
বেনাপোলের বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ও শার্শা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা দ্রুত মরদেহ ফেরত আনার জন্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলেও জানান।
এদিকে মৃত্যুর খবর পেয়ে নিহতদের গ্রামের বাড়িতে যান শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুলক কুমার মন্ডলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তি। এসময় ইউএনও দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। এছাড়া মরদেহ বাড়িতে আনতে সরকারিভাবে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।
জামাল হোসেন/এফএ/জেআইএম