ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক পারাপার
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে উপজেলার পাঁচটি প্রাথমিক ও চারটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক পারাপার হচ্ছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনের মহাসড়কে গতিরোধক নেই। নেই ফুটওভারব্রিজ। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঘটে পারে।
জানা যায়, উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের সোহাগপাড়া সরকারি প্রাথমিক ও গোড়াই উচ্চ বিদ্যালয়, একই ইউনিয়নের দেওহাটা সরকারি প্রাথমিক ও দেওহাটা এজে উচ্চ বিদ্যালয়, ফতেপুর ইউনিয়নের কুর্ণী সরকারি প্রাথমিক ও কুর্ণী জালাল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, শুভূল্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জামুর্কী ইউনিয়নের পাকুল্যা সরকারি প্রাথমিক ও জামুর্কী নবাব স্যার আব্দুল গনি উচ্চ বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়গুলো ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন অবস্থিত। বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরুর আগে এবং ছুটি শেষে নিরাপদে মহাসড়ক পারাপারে কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অধ্যয়নরত শত শত শিক্ষার্থী প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার হচ্ছে।
ইতোমধ্যে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কুর্ণী জালাল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র শহীদুর রহমান মহাসড়ক পার হওয়ার সময় দ্রুতগামী বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত হয়। এছাড়া দেওহাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র শিফাত ও ষষ্ঠ শ্রেণির সজীব হোসেন মহাসড়ক পার হওয়ার সময় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়।
এলাকাবাসী জানান, দুর্ঘটনা এড়াতে ও নিরাপদে মহাসড়ক পারাপারের জন্য ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে মহাসড়কে গতিরোধক তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু মহাসড়ক চার লেন উন্নতিকরণ কাজ চলায় এবং যানজট নিরসনে ওই সব গতিরোধক ভেঙে ফেলা হয়েছে। ফলে ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার হচ্ছে। শুধু শিক্ষার্থীরা নয় স্থানীয় হাজার হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত এভাবেই পারাপার হচ্ছে।
দেওহাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র হাসান, সিফাত, সপ্তম শ্রেণির রাশেদুল ইসলাম ও নবম শ্রেণির ছাত্রী সানজিদা আক্তার জানায়, মহাসড়ক পার হতে অনেক সময় লেগে যায়। তারপরও আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পার হয়ে স্কুলে আসি। বিদ্যালয় ছুটি শেষে অনেক সময় বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে লোক দিয়ে মহাসড়কের পার করে দেয়।
সোহাগপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রীনা রায়, গোড়াই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান এবং কুর্নী জালাল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তাহের জানান, তাদের বিদ্যালয়সহ মহাসড়ক সংলগ্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন মহাসড়ক পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসতে হচ্ছে। মহাসড়ক সংলগ্ন বিদ্যালয়ের সামনে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে তারা উল্লেখ করেন। তাই বিদ্যালয় সংলগ্ন মহাসড়কের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ ও গতিরোধক নির্মাণের দাবি জানান তারা।
মির্জাপুরের গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. খলিলুর রহমান পাটোয়ারীর বলেন, মহাসড়ক চার লেন উন্নতি করণ কাজ চলায় গতিরোধক ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। তবে ফোর লেনে সাধারণত গতিরোধক থাকে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত সাদমীনের বলেন, মহাসড়কের এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এস এম এরশাদ/আরএ/জেআইএম