মৌলভীবাজারের রেস্ট হাউজটিই ছিল পাক বাহিনীর টর্চার সেল

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ১০:২৫ এএম, ২৬ মার্চ ২০১৮

ছিল রেস্ট হাউজ। তাই এখানে ভালো একটি অবকাঠামো ছিল। ভালো অবকাঠামো থাকায় ৭১-এ পাকিস্তানি বাহিনী এই জায়গাকেই বেছে নেয় তাদের সিলেট অঞ্চলের ব্রিগেড হেড-কোয়ার্টার হিসেবে।

১৯৭১ সালের ভয়াল স্মৃতিবাহী মৌলভীবাজার পৌরসভাধীন বনবীথি আবাসিক এলাকার তখনকার দিনের রেস্ট হাউজ বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (পিটিআই)। এখানে পাকিস্তানি সেনাদের তৈরি করা পরিখা (বাংকার) আজও সেই বর্বরতার সাক্ষ্য বহন করছে।

পাকিস্থানি বাহিনীর হেড-কোয়ার্টার বানানোর পর পার্শ্ববর্তী এলাকার একটি ইটভাটা থেকে তাদের সহযোগী এ দেশীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় জোর করে ইট এনে স্থাপনাকে আরও মজবুত করে। তৈরি করে নির্যাতনের সেল ও বাংকার।

Molvibazar

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকদের এনে এখানে বর্বর নির্যাতন করতো।

এসব ইতিহাস মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে এখনও বিভীষিকাময়। পিটিআই পরিখার প্রতি দেয়ালে ভয়াল নির্মমতার ছবি ছিটিয়ে থাকলেও এ প্রজন্ম তা দেখতে পায় না। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পূর্ণ হলেও এই পরিখাকে পরিকল্পিতভাবে সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে না। পিটিআই কর্তৃপক্ষ স্ব-উদ্যোগে জায়গাটিকে আলাদা করে রাখলেও সচেতন মহলের দাবির স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (পিটিআই) প্রবেশদ্বারে স্মৃতিবহ এই পরিখাটির ত্রিমুখ পিটিআই ভবনে বেষ্টিত। সামনের দিকটি শুধু খালি। দেয়ালে ছত্রাত আকড়ে আছে। উপরিভাগে বেশ গুছিয়ে ফুলের টব রাখা হয়েছে। তবে তা পিটিআই কর্তৃপক্ষের স্ব-উদ্যোগে।

Molvibazar

মৌলভীবাজার প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (পিটিআই) এর প্রশিক্ষক দীপংকর মহান্ত জাগো নিউজকে বলেন, আমরা যেটুকু পারি এই জায়গাটিকে আগলে রাখি। সপ্তাহে একবার পরিষ্কার করানো হয়। তবে এটিকে আরও অনেক আগে সংরক্ষণ করে একটি স্মৃতিসৌধ ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর করা যেত। আমরা অনেকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও বলেছি।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জামাল উদ্দিন জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, আমরা এই স্থানটিতে একটি স্মৃতি স্থাপনা নিমার্ণের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় এই ব্যাপারে আন্তরিক হবে বলেই আশা করছি।

তিনি আরও বলেন, এখানে কি পরিমাণ নির্যাতন করা হতো তা কল্পনা করেও অনুধাবন করতে পারবেন না।

রিপন দে/এমএএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।