মুক্তি পেলেন ইটভাটায় ‘জিম্মি’ সেই ২১ শ্রমিক
শরীয়তপুরের ডামুড্যায় মেসার্স এইচ.কে. ব্রিকস্ নামে একটি ইটের ভাটায় দুই শিশুসহ ২১ শ্রমিককে জিম্মি করে রেখেছিল ভাটার মালিক। বিষয়টি জানতে পেরে গত ৯ মার্চ ‘ইট ভাটায় ‘জিম্মি’ শিশুসহ ২১ লেবার’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে জাগো নিউজ। সংবাদ প্রকাশের পর শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহেরের নির্দেশে গত বুধবার জেলা ইটভাটা মালিক সমিতি ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় লেবাররা ভাটা থেকে মুক্তি পান। গতকাল শুক্রবার লেবাররা তাদের নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছান।
উল্লেখ্য, গত নভেম্বর মাসের শেষের দিকে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা গ্রাম থেকে ভাটার সরদারের মাধ্যমে জেলার ডামুড্যা উপজেলার শিধুলকুড়া ইউনিয়নের বড় শিধুলকুড়া গ্রামের তালতলা মেসার্স এইচ. কে. ব্রিকস্ ইট ভাটায় তারা কাজ করতে আসেন। ভাটার তিন সরদার মোতালেব, খলিল ও জাহাঙ্গীর মিলে এই লেবারদের প্রতিজনকে ৪০ হাজার টাকা দাদন (অগ্রীম টাকা) দিয়ে কাজ দেবে বলে আশ্বাস দেন।
কিন্তু ডিসেম্বরের ১০ তারিখ পার হয়ে গেলেও লেবাররা দাদনের টাকা না পেয়ে ভাটার সরদারদের তাগাদা দেন। এরই মধ্যে ভাটার সরদাররা মালিকদের কাছ থেকে লেবারদের টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। আর সেই থেকে লেবাররা ভাটার মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে কাজ করে যাচ্ছিলেন।
লেবাররা কয়েকবার পালিয়ে যেতে চাইলে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার ঘটনাও ঘটেছে। তাছাড়া তাদের চোখের আড়াল হতেও দেয়নি মালিকপক্ষ। ভাটার মালিক মনোরঞ্জন কর্মকার ও ভাটার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের কাছে টাকা চাইলে লেবারদের মারধর করা হয় বলে জানান এসব শ্রমিকরা।
শিধুলকুড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জানে আলম খোকন বলেন, ডিসি স্যারের নির্দেশে ইটভাটার মালিক ও লেবারদের বিষয়টি মিমাংশা করা হয়েছে। লেবারদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। সাংবাদিকদের সহযোগিতায় লেবারদের উদ্ধার করতে পেরে আমি গর্বিত।
মো. ছগির হোসেন/এফএ/এমএস