তদন্তে দায়ী পুলিশকে ছাড় দেওয়া হবে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী


প্রকাশিত: ১২:৪৩ পিএম, ২৪ জুলাই ২০১৫
ফাইল ছবি

সিলেটের শিশু সামিউল আলম রাজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গাফিলতির জন্য দায়ী পুলিশকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

শুক্রবার দুপুরে সিলেট থেকে ঢাকা আসার পথে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান।

এ হত্যাকাণ্ডে পুলিশের গাফিলতি খতিয়ে দেখার জন্য গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার রাতে জমা দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেদনে যাদের দায়ী করা হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ৮ জুলাই শিশু সামিউলকে হত্যার পরপরই তার বাবা শেখ মো. আজিজুর রহমানের অভিযোগ পুলিশ গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ উঠে। গত ১৪ জুলাই জালালাবাদ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শর্ক (এসআই) আমিনুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে মহানগর পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।

কমিটির প্রধান ও মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এসএ রোকনউদ্দিন ৪২৪ পৃষ্ঠার একটি তদন্ত প্রতিবেদন গত রাতে পুলিশ কমিশনারের কাছে দেন। তদন্তে পুলিশের গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে বলে জানা যায়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গত বুধবার সিলেটে যান। ওই দিন বিকেলে তিনি শিশু সামিউলের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন। পরে মৌলভীবাজারে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। শুক্রবার দুপুরে তিনি ঢাকায় ফেরেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সিলেটে শিশু সামিউল আলম রাজনের বাবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও টাকার বিনিময়ে খুনিদের রক্ষার চেষ্টায় যেসব পুলিশ সদস্যের নাম এসেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, পুলিশের যদি কোনো গাফিলতি থাকে তবে পুলিশের আইন অনুযায়ী ওই পুলিশ সদস্যদের বিচার করা হবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তদন্ত কমিটি সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে তাদের ৪২৪ পৃষ্টার প্রতিবেদন জমা দেয়। তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. রোকন উদ্দিন। তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য ছিলেন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) জেদান আল মুসা ও উপ-কমিশনার মুশফিকুর রহমান।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জুলাই সিলেট শহরতলীর কুমারগাঁওয়ে খুঁটিতে বেঁধে পৈশাচিক নির্যাতন করে খুন করা হয় সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেয়ালি গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে রাজনকে।

ওই দিন রাতে রাজনের বাবা আজিজুল ইসলাম জালালাবাদ থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) আলমগীর  হোসেন ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। একপর্যায়ে এসআই আমিনুল তাকে গলাধাক্কা দিয়ে থানা থেকে বের করে দেন। পরে পুলিশের ওই দুই কর্মকর্তা মিলে মোবাইলে রাজনের খুনিদের সঙ্গে কথা বলেন।

রাজনের পরিবারের অভিযোগ জালালাবাদ থানা পুলিশের ওসি-তদন্ত আলমগীর হোসেন ও এসআই আমিনুল ইসলাম মিলে ১২ লাখ টাকার চুক্তিতে রাজনের প্রধান ঘাতক কামরুলকে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেন।

কামরুলকে সৌদি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে দেশে ফিরে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

ছামির মাহমুদ/এআরএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।