প্রধানমন্ত্রীকে ভাষণ শোনাতে চায় ‘ক্ষুদে মুজিব’
পরণে সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামা। গায়ে মুজিব কোট। চোঁখে কালো ফ্রেমের চশমা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতোই তর্জুনী তুলে ছোট্ট একটি ছেলে উচ্চ কণ্ঠে ভাষণ দিচ্ছে, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।’
মাত্র ১০ বছর বয়সী ফারহান সাদিক খান সামির কণ্ঠে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের পুরো ভাষণ শুনে মুগ্ধ সবাই। ৭ মার্চের কালজয়ী ভাষণ ছাড়াও এ বয়সে সে রপ্ত করেছে বঙ্গবন্ধুর আরো তিনটি ঐতিহাসিক ভাষণ। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে তা শুনিয়ে সামি পেয়েছে অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা। এলাকায় এখন তার পরিচিতি ‘ক্ষুদে মুজিব’ হিসবে।
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বাস্তা নাবিল আইডিয়াল স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সামি। তার বাবার নাম আমিরুল ইসলাম খান।তিনি স্থানীয় খাসের চর আলীয়া মাদরাসার প্রভাষক। মা রেখা খানম গৃহিণী। তিন ভাই বোনের মধ্যে সামিই সবার ছোট।
সামির বাবা আমিরুল ইসলাম জানান, মাত্র ৬ বছর বয়সে টিভিতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ দেখে সামি তা শেখার আগ্রহ প্রকাশ করে। পরে পুরো ভাষণ লিখে দিলে তা মুখস্ত করে সামি। ২০১৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ চত্বরে প্রথম এক অনুষ্ঠানে ৭ মার্চের ভাষণ দেয়। এরপর জাতীয় প্রেসক্লাব, জাতীয় শহীদ মিনার, শিল্পকলা একাডেমী, ধানমন্ডি ৩২, বাংলা একাডেমী, শিশু একাডেমীসহ স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়ে সামি সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়। মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, কবি-সাহিত্যিকসহ অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা কুড়িয়েছে সামি।
৭ মার্চের ভাষণ ছাড়াও ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, ১৯৭৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে ও একই বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমীতে দেয়া বঙ্গবন্ধুর ভাষণ রপ্ত করেছে ছোট্ট সামি।
সামির মা রেখা খানম জানান, সামির আগ্রহ আর তার বাবার প্রেরণাতেই সে এতদূর এসেছে। যখন সবাই সামিকে ছোট মুজিব বলে ডাকে তখন তার খুব ভালো লাগে। জ্ঞানী-গুণীদের প্রশংসা এবং তাদের সঙ্গে ছবি দেখে গর্বে তার বুক ভরে ওঠে। বড় হয়ে যেন মানুষের মতো মানুষ হয়ে উঠতে পারে সেজন্য ছেলের জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন তিনি।
নাবিলা আইডিয়াল স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইয়াছিন খান জানান, সামি তাদের স্কুলের গর্ব। এই ছোট্ট বয়সে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ যেভাবে রপ্ত করেছে তাতে তিনিও বিস্মিত হন। তাদের স্কুলেরও অনেক প্রশংসা কুড়িয়েছে সামি।
এ বিষয়ে ফারহান সাদিক খান সামি জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার খুব ভালো লাগে। তার জন্য দেশ স্বাধীন হয়েছে। এ মহান নেতার ঐতিহাসিক ভাষণগুলো মুখস্ত করতে পেরে সে খুব খুশি। সবাই যখন প্রশংসা করে তার খুব ভালো লাগে। প্রথম প্রথম মঞ্চে ভাষণ দিতে ভয় লাগত। এখন আর ভয় কাজ করে না। বঙ্গবন্ধুকে বুকে ধারণ করেই বড় হতে চায় সে।
সামি জানায়, তার ইচ্ছা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একদিন নিজের কণ্ঠে ভাষণ শোনাবে। কেউ যদি এ সুযোগটা করে দেয় তাহলে তার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবে সামি।
বি.এম খোরশেদ/এফএ/পিআর