প্রথম শ্রেণির রেল স্টেশনে তৃতীয় শ্রেণির যাত্রীসেবা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গাজীপুর
প্রকাশিত: ০৭:০১ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন দিয়ে প্রতিদিন ৫৪টি ট্রেন যাতায়াত করে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৫-৬ হাজার মানুষ চাকরি বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজে শুধু রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করে এ স্টেশন দিয়ে। তাছাড়া আরও কয়েক হাজার যাত্রী দেশের বিভিন্ন স্থানে যাওয়া-আসা করে।

জয়দেবপুর জংশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন মাস্টার মো. শাহজাহান জানান, ১০ বছর পূর্বে এ স্টেশনটি তৃতীয় শ্রেণির স্টেশন ছিল। বর্তমানে এ স্টেশনটি প্রথম শ্রেণির স্টেশনে অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু ঢাকা বিভাগের ১৩টি প্রথম শ্রেণির রেল স্টেশনের মধ্যে এ স্টেশনের রাজস্ব আয় তৃতীয় পর্যায়ে। বলা চলে বিভাগীয় শহর স্টেশন সিলেটের চেয়ে আয় বেশি এ স্টেশনে। কিন্তু জনবলের দিক থেকে যাত্রীর সুযোগ-সুবিধা তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে। এ অবস্থায় স্বল্প জনবল দিয়ে হাজার হাজার যাত্রীর পরিবহন এবং বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধা দিতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে এ স্টেশনে দায়িত্বপ্রাপ্তদের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এ রেলওয়ে স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন ট্রেনে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে হাজার হাজার যাত্রী যাতায়াত করলেও পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাবে যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্টেশনে প্রয়োজনীয় ওয়েটিং রুম না থাকায় যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাাঁড়িয়ে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এছাড়া শৌচাগারের ব্যবস্থাও পর্যাপ্ত নয়। পরিছন্নতা কর্মী না থাকায় প্ল্যাটফর্মসহ পুরো স্টেশন এলাকা ধুলাবালি ও আবর্জনায় নোংরা হয়ে থাকে। এছাড়াও স্টেশনে পর্যাপ্ত জনবলের অভাব রয়েছে। সব মিলিয়ে এ স্টেশন দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়।

gazipur

জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন থেকে ঢাকার কমলাপুরের দূরত্ব প্রায় ৩৬ কিলোমিটার। ট্রেনে কমলাপুর যেতে সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। কিন্তু সড়ক পথে গাজীপুর শহর থেকে কমলাপুর যেতে সময় লাগে প্রায় ৪ ঘণ্টা। ডেমু ট্রেনে ঢাকার ভাড়া মাত্র ৪৫ টাকা। অন্যদিকে বাসের ভাড়া ৮০ টাকা। তাই দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে ট্রেন ভ্রমণ। পাশাপাশি ট্রেনের যাত্রী সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার যাত্রী সড়ক পথে দুঃসহ যানজট এড়াতে ট্রেনে যাতায়াত করছে। কম সময়ে স্বচ্ছন্দে গন্তব্যে পৌঁছানোর কারণে ট্রেন ভ্রমণ বর্তমানে সবার কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে এ স্টেশন দিয়ে যাতায়াতকারী বাড়লেও যাত্রীদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে।

স্টেশন সূত্র জানায়, জয়দেবপুর স্টেশন হয়ে প্রতিদিন ৫৪টি ট্রেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে আসা-যাওয়া করে। এর মধ্যে তুরাগ, আন্তনগর, কমিউটার এবং চারটি ডেমুসহ মোট ৪৪টি ট্রেন জয়দেবপুর জংশনে থেমে বিভিন্ন স্থানে চলাচল করে। এ জংশন থেকে প্রতিদিন ৫-৬ হাজার যাত্রী শুধু রাজধানী ঢাকাতেই যাতায়াত করে। এ স্টেশনে একজন স্টেশন মাস্টার ও তিনজন সহকারী স্টেশন মাস্টার দায়িত্ব পালন করছেন। টিকেট বিক্রির জন্য ১৫ জন কর্মচারীর মধ্যে আছেন মাত্র সাতজন। টিকেট কালেক্টর হিসেবে রয়েছেন মাত্র দুইজন।

রেলওয়ে পুলিশের জয়দেবপুর জংশন ফাঁড়ির এসআই রফিকুল হক জানান, এ জংশনটি দেশের প্রথম শ্রেণির স্টেশন হলেও সে তুলনায় সেবা এখানে নেই। রেলস্টেশন থেকে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য একটি মাত্র গেট। যার কারণে রেললাইন ক্রস করে পায়ে হেঁটে যাত্রীদের বাইরের গেট দিয়ে বের হতে হয়। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। তাই জরুরি ভিত্তিতে স্টেশনের দুটি গেট করা প্রয়োজন।

আমিনুল ইসলাম/আরএআর/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।