কর্মস্থলে ফিরতে বগুড়ায় টিকিটের জন্য হাহাকার


প্রকাশিত: ১২:৫৯ পিএম, ২১ জুলাই ২০১৫

বগুড়ায় বাস-ট্রেনের টিকিটের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। টিকিট সংকট আর বৃষ্টিতে ঈদে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। ট্রেন ও বাসের কোথাও কোন টিকিট নেই। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে বৃষ্টি। ট্রেন-বাসের টিকিট না পেয়ে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে আসা লোকজন পড়েছেন চরম বেকায়দায়। রোববার থেকে শুরু হয়েছে বাস ও ট্রেনের অগ্রিম ফিরতি টিকিটে যাত্রী পরিবহন। মঙ্গলবার দুপুরে শহরের বিভন্ন বাস টার্মিনাল ও ট্রেনে স্টেশনে টিকিটের জন্য হাহাকার করতে দেখা গেছে যাত্রীদের।

এদিকে, বগুড়ার চারমাথা ও ঠনঠনিয়া বাস টার্মিনালে প্রতিদিন সাড়ে তিন হাজার যাত্রীকে কাউন্টার থেকে অগ্রিম টিকিট দেয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ যাত্রী টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়েছে। স্টেশনে যাত্রীদের লাইনে থাকতে শেষ হয়ে গেছে টিকিট। লাইনে দাঁড়ানো অনেক যাত্রী টিকিট না পেয়ে রেল স্টেশনে শ্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেছে। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত একই চিত্র ছিল বিভিন্ন স্টেশনগুলোতে।

যাত্রীদের অভিযোগ, কালোবাজারিদের কাছে টিকিট সরবরাহ করায় লাইনে দাঁড়িয়ে তারা টিকিট পাননি। কাউন্টারে টিকিট না থাকলেও বেশি দামে টিকিট মিলছে কালোবাজারিদের কাছে। একই অবস্থা বাসেও।

বগুড়া ঠনঠনিয়া বাস টার্মিনালে টিআর ট্রাভেলসের কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, ২৫ জুলাই পর্যন্ত বগুড়া থেকে ছেড়ে যাওয়া বিভিন্ন গন্তব্যের গাড়ির অগ্রিম টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। এখন চলছে যাত্রী পরিবহন। তবে মঙ্গলবার দুপুরে ঠনঠনিয়া এলাকায় ঢাকা অভিমুখে রওনা হওয়া যাত্রী আমিনুল ফরিদ জানান, তিনি নির্ধারিত মূল্যের চাইতে ২০০ টাকা বেশি দিয়ে একটি টিকিট কিনেছেন। একই ধরনের অভিযোগ করছেন ব্যাংক কর্মকর্তা সজিবুল হক। তিনিও ১৮০ টাকা বেশি দিয়ে একটি এসি গাড়ির টিকিট কিনেছেন।

সকাল সাড়ে ৯টায় ঠনঠনিয়া বাস টার্মিনালের উল্টো দিকের একটি দোকানের সামনের শেডের নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন আল মামুন ও রোখসানা বেগম। বৃষ্টিতে ভিজে একাকার। নিজে ভিজলেও কোলে থাকা ছোট্ট ছেলের মাথা বাঁচাতে একটা কাপড় দিয়ে ঢেকে দেন। আর রোখসানার হাতে দুটি ব্যাগ। অনেক মানুষের মধ্যে কোন রকমে গাদাগাদি করে দাঁড়াতে পেরেছেন তাঁরা।

মামুন জানান, তাঁরা বরিশাল থেকে বিআরটিসির একটি বাসে বগুড়া এসেছিলেন। এখন ফিরতি পথে পড়েছেন বিড়ম্বনায়। কাউন্ডারে টিকিট নেই। আবার না গেলেও চলবে না। বাধ্য হয়ে কালোবাজারির সহযোগিতা নিয়েছেন। এখন ৫০০ টাকা বেশি দিয়ে ২টা টিকিট তাকে দেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

সারাদিনই ঠনঠনিয়া বাস টার্মিনাল এলাকার প্রতিটি দোকান, ভবন ও রেস্তোরাঁর সামনে এভাবে শতশত মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। কিছুক্ষণ পরপর দূরপাল্লার বাসগুলো এসে থামছে পরিবহনের নিজস্ব কাউন্টারে। কে কার আগে যাত্রীদের মালামাল বহন করবে সেই প্রতিযোগিতায় নেমে টার্মিনালের কুলিরা রীতিমতো টানা-হেঁচড়া করছে। কুলিদের এই প্রতিযোগিতায় নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে যাত্রীদের। অনেক কুলিই যাত্রীদের কাছে বেশি টাকা দাবি করছে। আর এ নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে।

শহর ও শহরের বাইরের কয়েকটি বাস কাউন্টার সরোজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, পাবনা, ময়মনসিংহ ও চট্রগ্রামের যাত্রীরা চরম বেকায়দায় পড়েছেন। ওই সব অঞ্চলের লোকজন কাউন্টারে এসে টিকিটের জন্য হাহাকার করছে। বাড়তি টাকা দিয়েও টিকিট মিলছে না। ওইসব অঞ্চলে বগুড়া থেকে যাতায়াতের জন্য কম সংখ্যক বাস সার্ভিস থাকায় আরো কয়েকদিন আগে বাসের টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেছে।

লিমন বাসার/এআরএ/এমআরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।