গাড়ি ভাঙছে পরীক্ষার্থীরা, দাঁড়িয়ে দেখলেন ইউএনও

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০৬:৪০ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে যাদুরচর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা। এ সময় ইউএনও’র গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। একইসঙ্গে ইউএনওকে দেড়ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা।

হামলার সময় ইউএনও’র গাড়ি, শিক্ষকদের মোটরসাইকেল, বিদ্যালয়ের সিসি ক্যামেরা, দেড়শ ফিট বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দেয়ালসহ দরজা-জানালা ও চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের রোষানল থেকে বাঁচাতে ইউএনওকে দোতলায় নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয় শিক্ষকরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ সময় এক পুলিশ সদস্যসহ ১০/১২ জন আহত হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পরীক্ষার্থীর অভিযোগ, রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অন্য কোনো কেন্দ্রে না গিয়ে শুধুমাত্র যাদুরচর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে কর্তব্য পালন করেন। এছাড়া কোনো কারণ ছাড়াই পরীক্ষার্থীদের নানাভাবে হয়রানি করায় সবাই তার ওপর বিক্ষুব্ধ। ফলে এ ঘটনা ঘটেছে।

যাদুরচর উচ্চবিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব মইনুল হক জানান, শনিবার অঙ্ক বিষয়ের পরীক্ষা চলছিল। মোট ১ হাজার ১৪৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ৭৭ জন অংশ নেয়। শিক্ষার্থীরা ছিল রৌমারী সিজি জামান উচ্চবিদ্যালয়সহ অপর ৭টি বিদ্যালয়ের।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রৌমারীর ইউএনও দীপংকর রায় বলেন, পরীক্ষা শুরুর ১০ মিনিট পর আমি কেন্দ্রে উপস্থিত হই। পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা হট্টগোল করে। এ সময় আমার গাড়ি, শিক্ষকদের ১৩টি মোটরসাইকেলসহ বিদ্যালয়ে লাগানো ১৫টি সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে। ভেঙে ফেলা হয় দেড়শ ফিট বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দেয়াল, পরীক্ষা কেন্দ্রের দরজা-জানালা। শিক্ষার্থীদের এ তাণ্ডবে স্থানীয়রাও অংশ নেয়।

রৌমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবর রহমান বলেন, বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের জন্য বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ইউএনও দীপংকর রায়, সার্কেল এএসপি সিরাজুল ইসলাম, ওসি জাহাঙ্গীর আলমসহ উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। মূলত ভুল-বোঝাবুঝির কারণে রৌমারী সিজি জামান উচ্চবিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা এ হামলা চালায়। পরে স্থানীয় ও সুযোগ সন্ধানীরা এতে অংশ নিয়ে তাণ্ডব চালায়। সরকারি সম্পদ নষ্ট করায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

রৌমারী অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্কেল এএসপি সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব ভিডিও দেখে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করা হবে। এছাড়া তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নাজমুল হোসাইন/এএম/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।