বন্ধুর পরকীয়ার গোপন ভিডিও ধারণ, অতঃপর...

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নরসিংদী
প্রকাশিত: ০৯:৩৮ পিএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

নরসিংদীর হাজিপুরে হৃদয় সাহা খুনের রহস্য উন্মোচন হয়েছে। বন্ধু ও তার পরকীয়া প্রেমিকার অনৈতিক কাজের ভিডিও ধারণ করে ওই ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইলের কারণেই তাকে খুন করা হয়েছে। এ নিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে দুই খুনি।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ জানুয়ারি নিখোঁজ হয় হাজিপুরের গোপাল চন্দ্র সাহার ছেলে হৃদয় সাহা (২৫)। দু’দিন পর রায়পুরা মির্জানগর বাহেরচর এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে রায়পুরা থানা হত্যা মামলা করেন। এরপর মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হন্তান্তর করেন পুলিশ সুপার আমেনা বেগম।

তদন্ত ও অনুসন্ধান শেষে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে হাজিপুর এলাকার ফজলুল হকের ছেলে রুবেল মিয়াকে (২৬) গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

পরে তার দেয়া তথ্য মতে একই এলাকার হারাধন দাসের ছেলে কথিত প্রেমিক বাদল দাসকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার দুই যুবক হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

পরে গোয়েন্দা পুলিশ তাদের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াইজ আল করুনীর আদালতে সোপর্দ করেন। তারা আদালতের বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

আদালতে জবানবন্দিতে গ্রেফতার বাদল উল্লেখ করেন, প্রচণ্ড জেদ ও ব্ল্যাকমেইলের কারণে হৃদয়কে খুনের সিদান্ত নেন তিনি।

তিনি জানান, নিহত হৃদয় ও তিনি বন্ধু ছিলেন। তার সঙ্গে এলাকার এক গৃহবধূর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই গৃহবধূর সঙ্গে নিজের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের কিছু ভিডিও মোবাইলে রেকর্ড করেন তিনি। কিন্তু ওই ভিডিও’র কয়েকটি ক্লিপ হৃদয়ের হাতে চলে যায়। এর সূত্র ধরে হৃদয় তার প্রেমিকাকে ব্ল্যাকমেইল শুরু করে।

তিনি আরও বলেন, হৃদয় তার প্রেমিকার কাছ থেকে অর্থনৈতিক সুবিধাও নেয়। বিষয়টি তিনি জানতে পেরে হৃদয়কে খুন করার পরিকল্পনা শুরু করেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী আরেক বন্ধু রুবেল ও নিহত হৃদয়কে নিয়ে একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করেন। পরে রায়পুরা আমিরগঞ্জ ব্রিজ এলাকায় গিয়ে ৩ বন্ধু মাদক সেবন করেন।

ওদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাহেরচর এলাকার নির্জন একটি কবরস্থানে গিয়ে রশি দিয়ে হৃদয়ের গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন। মৃত্যু নিশ্চিত করতে নিহতের পুরুষাঙ্গে আঘাত করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল গাফফার বলেন, প্রচণ্ড জেদ ও প্রেমিকাকে ব্ল্যাকমেইলের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডটি একবারেই ক্লুহীন ছিল। আইনের চোখ ফাঁকি দিতে ভিন্ন একটি উপজেলায় নিয়ে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। সেটি আজ উন্মোচিত হলো।

সঞ্জিত সাহা/এএম/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।