বিন্দুমাত্র দয়া হয়নি দুলাভাইয়ের

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশিত: ০৫:১১ পিএম, ২৯ জানুয়ারি ২০১৮

সিদ্ধিরগঞ্জে অপহৃত তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী রোকসানাকে (১০) ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় রোববার রাতে বন্দর এলাকা থেকে রায়হান কবির সোহাগ (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পরে সোহাগকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনাটি স্বীকার করে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেয়। সোহাগের দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা ইয়াছমিন নিহত রোকসানার বড় বোন আরমিনার বান্ধবী। সোহাগের প্রথম স্ত্রী তামান্না কুমিল্লায় বসবাস করে।

সোমবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ (সার্কেল-ক) মো. শরফ্দ্দুীন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- থানা পুলিশের ওসি আব্দুস সাত্তার মিয়া, পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম ও পরিদর্শক (অপারেশন) আজিজুল হক।

গ্রেফতার রায়হান কবির সোহাগের বাবার নাম কবির আহমেদ। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানার শাসনগাছা এলাকায়।

অতিরিক্ত পুলিশ মো. শরফুদ্দীন জানান, গত ২৩ জানুয়ারি বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইলের আরামবাগ এলাকা থেকে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী রোকসানা নিখোঁজ হয়।

ওই ঘটনায় ছাত্রীর বাবা আশরাফুল ইসলাম ২৪ জানুয়ারি থানায় একটি জিডি করেন। ২৬ জানুয়ারি সোনারগাঁও থানার কাইক্কারটেক ব্রিজ এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে প্লাস্টিকের বস্তাভর্তি কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মরদেহটি হাত-পা বাঁধা ও মুখে স্কচটেপ পেঁচানো অবস্থায় ছিল। পরে অজ্ঞাত হিসেবে মরদেহটি নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। খবর পেয়ে ওইদিনই মর্গে গিয়ে রোকসানার বাবা আশরাফুল আলম মরদেহ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় ২৭ জানুয়ারি আশরাফুল আলম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ মো. শরফুদ্দীন আরও জানান, মামলাটি তদন্তকালীন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ খুনের সঙ্গে জড়িত রায়হান করিব সোহাগকে শনাক্তের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর সোহাগকে জিজ্ঞাবাসাবাদ করলে সে ঘটনাটি স্বীকার করে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেয়।

জিজ্ঞাসাবাদে সোহাগ পুলিশকে জানায়, ২৩ জানুয়ারি রোকসানাকে কৌশলে বন্দরের একটি ভাড়াটিয়া বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করে। ওই সময় রোকসানা চিৎকার করলে হাত-পা বেঁধে ও মুখে স্কচটেপ পেঁচিয়ে গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যা করে সোহাগ।

২৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় নিহত রোকসানার মরদেহ বস্তায় ভরে একটি ব্যাটারিচালিত আটোরিকশাযোগে সোনারগাঁয়ের কাইারটেক চর এলাকায় নিয়ে ব্রিজের নিচে ফেলে আসে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি আব্দুস সাত্তার মিয়া বলেন, ধর্ষকের মুখে ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার বর্ণনা শুনে গা শিউরে ওঠে। সোহাগের দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা ইয়াছমিন পাখি নিহত রোকসানার বড় বোন আরমিনার বান্ধবী। সেই সূত্রেই রোকসানাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করত সোহাগ। নিহত রোকসানা দুলাভাই বলে ডাকত পাখির স্বামী সোহাগকে। অথচ এমন ঘটনা ঘটানোর আগে বিন্দুমাত্র দয়া হয়নি দুলাভাইয়ের।

ঘটনার দিন রোকাসানাকে নিজ বাসা থেকে কৌশলে ডেকে নিয়ে যায় সোহাগ। পরদিন তার পরিবারের কাছে মোবাইলে ফোনে মুক্তিপণ হিসেবে ছয় হাজার টাকা দাবি করে। পরে তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে ব্রিজের নিচে ফেলে আসে।

নিহত রোকসানার বড় বোন আরমিনা বলেন, আমার আদরের বোনকে নৃশংসভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের একটাই দাবি, তার যেন ফাঁসি হয়। আমরা মৃত্যুর বদলে মৃত্যু দেখতে চাই।

হোসেন চিশতী সিপলু/এএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।