স্বামীর ধর্ষণের বর্ণনা দিলেন স্ত্রী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা
প্রকাশিত: ০৯:৩৯ পিএম, ২১ জানুয়ারি ২০১৮

আমার আগে আরও চার নারীর সর্বনাশ করেছে নাসির। বিয়ের নামে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে সে। তাদেরকে নিয়ে বাসা ভাড়া করে থেকেছে। ধর্ষণ করেছে। সেসব মেয়েরা এখন নাসিরকে ছেড়ে নিজেদের অবস্থানে ফিরে গেছে।

সেই নাসির এখন আরও একটি মেয়ের পেছনে লেগেছে। তাকে বিয়ে করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তাকে নিয়ে এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তার সঙ্গে বসে ইয়াবা খায় নাসির।

নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া প্রতারণার বর্ণনা এভাবেই দিয়েছেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের শ্রমিক আবুবকর সিদ্দিকের মেয়ে মাছুরা খাতুন।

মাছুরা নাসির উদ্দিনের সাড়ে তিন বছরের বিবাহিত স্ত্রী। বর্তমানে তিনি অন্তঃসত্ত্বা। প্রায় এক মাস আগে নাসির তাকে ছেড়ে চলে যায়। এরপর নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

নিজের স্বামী সম্পর্কে মাছুরা আরও বলেন, চার বছর আগে আমাদের পরিচয় হয়। নাসির কালিগঞ্জ উপজেলার দুদলি গ্রামের মো. বাসারতুল্লাহর ছেলে। কালিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিল। নানা কারণে নাসির উদ্দিন ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত হয়। দুই পক্ষের অভিভাবকের অমতে নাসিরের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। এরপর নাসির আমাকে সাতক্ষীরায় এনে ভাড়া করা বাসায় থাকতো।

মাছুরা বলেন, নাসিরের সঙ্গে কয়েকজন পুলিশ সদস্যের সুসম্পর্ক রয়েছে। সে নিজেই একজন ইয়াবাসেবী। ইয়াবা ও ফেনসিডিল কেনাবেচা করে। প্রায়ই রাতে আমাদের বাসায় আসতো ফিরোজ ও আমিনুর নামের দুই পুলিশ সদস্য। সঙ্গে থাকতো ইটাগাছার সাইফুল নামের আরও এক যুবক।

তারা একসঙ্গে আমার ঘরে বসে ইয়াবা খেতো। পুলিশের সঙ্গে চুক্তি করে সাধারণ মানুষকে ধরিয়ে আনতো। আমি আপত্তি জানাতাম। প্রতিবাদ করায় আমাকে মারধর করতো নাসির। পেটের প্রথম সন্তান সাড়ে চারমাস পর গর্ভপাত করায় নাসির। দ্বিতীয় সন্তান পেটে আসার পর থেকে নাসির আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

এরই মধ্যে সে অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। তাকে ঘরে নিয়ে আসতো। বোন পরিচয়ে ঘরে রাখতো। তার সঙ্গে বসে ইয়াবা খেতো। প্রতিবাদ করলে আমাকে মারধর করতো নাসির।

মাছুরা জানান, আমাদের প্রথম বিয়ের স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরযুক্ত কাগজপত্র চাইতাম। কিন্তু নাসির দিতে চাইতো না। পরে শহরের কাটিয়ায় বাসা বদল করলে বাড়ির মালিক আমাদের পুলিশে সোপর্দ করে।

এরপর সাতক্ষীরার কাটিয়া পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক মো. বাহারুল ইসলামের সহায়তায় গত ১ নভেম্বর আমার সঙ্গে নাসিরের বিয়ে পড়ান ম্যারেজ রেজিস্ট্রার মাওলানা আবদুর রাজ্জাক। এতো কিছুর পরও আমি নাসিরের সঙ্গে ঘর করতে চাই।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মো. নাসির উদ্দিন বলেন, আমার সঙ্গে মাছুরার বিয়ে হয়েছে ঠিক। তবে ঝামেলা চলছে। বর্তমানে আমি ঢাকায়। বাড়ি ফেরার পর এসব বিষয়ে কথা বলব। আমি মাছুরাকে তো পরিত্যাগ করিনি।

আকরামুল ইসলাম/এএম/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।