টাকায় মোবাইল নম্বর পেয়ে পরকীয়া, অতঃপর
পরকীয়া প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রীসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শিরীন কবিতা আখতার জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- পাবনা সদর উপজেলার গোপালপুর এলাকার গোলাম মোহাম্মদের মেয়ে কুলসুম নাহার বিউটি (৪৬), তার প্রেমিক আতাইকুলা উপজেলার রাণীনগরের আক্কাস আলীর ছেলে রুহুল আমিন (৪৭) এবং রুহুল আমীনের বন্ধু একই গ্রামের ইয়াসিন মোল্লার ছেলে সোলেমান আলী (৪৫)।
রায় ঘোষণাকালে দণ্ডপ্রাপ্ত বিউটি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। তবে বাকি দুই আসামি ঘটনার পর গ্রেফতার হলেও জামিনে বেরিয়ে পলতক রয়েছেন। এর আগে ওই তিন আসামিই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
হত্যাকাণ্ডের শিকার মোশাররফ হোসেন খোকন মৃধা পাবনা সদর থানার টেকনিক্যাল মোড়ের আশরাফ আলীর ছেলে। বিউটি-মোশাররফ দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। পাবনা শহরের কালাচাঁদপাড়া মহল্লায় ভাড়া বাসায় খুন হন মোশাররফ।
আদালতের আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মাহমুদুর রহমান রুমন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু।
রায় ঘোষণার পর এন্তাজুল হক বাবু জানান, টাকায় মোবাইল নম্বর পেয়ে বিউটির সঙ্গে যোগাযোগ হয় রুহুল আমিনের। পরে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন তারা। একপর্যায়ে মোশাররফ হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বিউটি ও রুহল আমিন।
২০১১ সালের ৩০ জুন রাতে বন্ধু সোলেমান আলীকে নিয়ে রুহুল আমিন পরকীয়া প্রেমিকার বাড়িতে যান। রাত সাড়ে ১১টার দিকে মোশাররফ হোসেনকে শোবার ঘরে ওই তিনজন শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর মরদেহ গুমের চেষ্টা করলে টের পেয়ে যায় প্রতিবেশীরা। পরে পালিয়ে যান রুহুল আমিন ও সোলেমান আলী।
ওই রাতেই পাবনা সদর থানা পুলিশ ভাড়া বাড়ি থেকে মোশাররফের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে। গ্রেফতার করা হয় তার স্ত্রী বিউটিকে। পরদিন এনিয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে স্বজনরা। এ মামলায় মোট ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেন আদালত।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর/এমএস