জমে উঠেছে পিরোজপুরের ঈদ বাজার
এক মাস সিয়াম সাধনার পরে আসে পবিত্র ঈদ। ঈদে সকল বয়সের মানুষের চাই নতুন পোশাক। আর এই নতুন পোশাক ঈদের আনন্দকে বাড়িয়ে দেয় আরো কয়েক গুণ। ঈদ আনন্দ সবার মাঝে ভাগাভাগি করে নিতে শেষ মুহূর্তে বিকিকিনিতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে পিরোজপুরের বিপণি বিতানগুলো।
গত কয়েক সপ্তাহ পিরোজপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলে বিরাজ করেছিল দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। দিন রাত পুরো সময়টাই ছিল বর্ষার দখলে। আর এসময় কোনো মানুষ বের হতে পারেননি ঘর থেকে। তাই একটু রোদের দেখা মেলার কারণে মানুষ তার পছন্দের পোশাকটি কিনতে আসতে শুরু করেছে বাজরে। আর এ কারনেই পিরোজপুরের বাজারে দেখা যাচ্ছে ক্রেতার আনাগোনা।
বিভিন্ন বিপণি বিতান ঘুরে দেখা গেছে, শাড়ি, থ্রি-পিচ, পাঞ্জাবিসহ ছোটদের নানা ধরনের পোশাক এসেছে। দেশীয় পোশাকের পাশাপাশি রয়েছে ভারতীয় পোশাকের বিপুল সমাহার। নানা নামের এ সকল পোশাক কিনতে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীরাই বেশি আগ্রহী।
দোকানিরা তাদের শো-রুমগুলো সাজিয়েছেন বিভিন্ন জনপ্রিয় মুভি ও সিরিয়ালের নাম অনুসারে দেশি-বিদেশি পোশাকে। এর মধ্যে নজর কেড়েছে কিরণমালা, ঝিনুকমালা, বজ্রমালা, পাখি, আনারকলি, দীপিকা, সোনাক্ষী, ঝিলিক-২, রঞ্জনা, খুশি, ডিস্কোচালি, পাকিস্তানি লোন, টাপুর টুপুর, ফ্লোরটার্চ, মহারানী ভিকটোরিয়া ডিজাইনের পোশাক, থ্রি-পিচ আর তরুণদের মোদি কোর্ট, জিন্স প্যান্ট ও রেডিমেন্ট পোশাক।
এ সকল পোশাকের দাম ২ হাজার থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হাকছেন দোকানিরা। তবে মেয়েদের কিরণমালা ও ঝিনুকমালা ড্রেস এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি বলে জানান দোকানীরা। মেয়েদের কিরনমালা ড্রেস পাওয়া যাচ্ছে দেড় হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার, ওয়েস্টার্ন ড্রেস ৫ শ’ থেকে পাঁচ হাজার টাকা, পাখি লেহেঙ্গা তিন থেকে সাত হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
তবে ভারতীয় শাড়ির চেয়ে এবার দেশি জামদানি, কাতান এবং টাঙ্গাইলের সুতি শাড়ির বাজার চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি দেশি তৈরি বুটিক থ্রি-পিস, শাড়ি, পাঞ্জাবি ও শিশুদের তৈরি বিভিন্ন পোশাকের চাহিদা রয়েছে। ছোটদের পোশাকের মধ্যে লেহেঙ্গা, মাসাক্কালি, সিঙ্গেল টপস, টপস সেট, গেঞ্জি সেটের দাম পড়ছে ১২’শ থেকে ৭ হাজার টাকা।
পিরোজপুর বাজারের একজন কাপড় ব্যবসায়ী জানান, গত কয়েকদিন বর্ষার কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পাড়েনি। আমদের তেমন কেন বেচা হয়নি। বর্তমানে আবহাওয়া ভাল থাকার কারণে এখন অনেক ত্রেতা আসতে শুরু করেছে। আমদের বেচাকেনা অনেক ভাল হচ্ছে। এ বছর অনেক নতুন কালেকশন রয়েছে।
সুমাইয়া নামে একজন ক্রেতা জানান, এ বছর আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে আমরা আগে বের হতে পারিনি। এই দুই দিন একটু আবহাওয়া ভাল থাকার কারণে আমি এখন আমার পছন্দের একটি পোশাক কিনতে এসেছি। কিন্তু পোশাকের দাম একটু বেশি বলে মনে হচ্ছে। দাম বেশি থাকলেও এ বছর অনেক নতুন কালেকশন রয়েছে।
এদিকে সবচেয়ে বিশি স্কুল কলেজ পড়ুয়া মেয়েদের ভিড় দেখা যাচ্ছে চুড়ি ফিতা কসমেটিকসের দোকানে। ঈদে নতুন পোশাকের পাশাপশি চাই একটু সাজার জন্য কসমেটিকস । তবে মেয়েদের পাশাপাশি পিছিয়ে নেই ছেলেরা। তারাও আসছেন ঈদের পোশাকটি কেনার জন্য। এ বছর ঈদের পাঞ্জাবীর পাশাপাশি চলছে বিভিন্ন ধরনের শার্ট ,গেঞ্জি, ফতুয়া। আর এর সাথে চলছে জিন্সের প্যান্ট। পাঞ্জাবির মধ্যে বড়দের ধুতি কাতান ও ছোটদের ধুতি কাতান এবার বেশ জনপ্রিয়। তবে গতবার যে মূল্যে শার্ট ও পাঞ্জাবি বিক্রি হয়েছে এবার তার চেয়ে বেশি দাম বলে অনেক ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন।
হাসান মামুন/এসএস/আরআইপি