পঞ্চগড়ে হাড় কাঁপানো শীত অব্যাহত

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পঞ্চগড়
প্রকাশিত: ০৫:১১ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০১৮

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও হাড় কাঁপানো শীত কমেনি। গত সোমবার ৫০ বছরের ইতিহাসে দেশের সর্বনিম্ন ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছিল জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলায়। দুই দিনে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। মঙ্গলবার সকালে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্র ছিল ৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর বুধবার সকাল ৯টায় ৭ দশমিক শুন্য ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলেও তেঁতুলিয়াসহ জেলার ৫ উপজেলায় তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়েই চলেছে। দিনরাত ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে গোটা এলাকা। হাড় কাঁপানো শীত আর ঘন কুয়াশার ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন কৃষি শ্রমিকসহ খেটে খাওয়া মানুষগুলো। স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। মসজিদে কমে গেছে মুসুল্লিদের উপস্থিতি। বিশেষ করে রিকশাভ্যান চালক আর দিনমুজুরের আয় শূন্যের কোঠায় নেমেছে। ঠান্ডার কারণে খেটে খাওয়া মানুষ কাজ করতে পারছেন না। হাতের আঙ্গুল অবশ হয়ে থাকছে। ঘন কুয়াশার কারণে স্বাভাবিক যান চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে।

Panchagarh-Cold-Wave

বুধবার সকালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দূরপাল্লার বাস ৩ থেকে ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত দেরিতে জেলায় পৌঁছেছে। গরু ছাগলসহ গৃহপালিত পশু স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। ৬ দিনের টানা শৈত্যপ্রবাহে জবুথুবু হয়ে পড়েছে স্থানীয় মানুষজন।

জেলা শহরের মসজিদপাড়া মহল্লার করিমা বেগম বলেন, এবারের মতো শীত আর দেখি নাই। দিন রাত একই অবস্থা। গরু ছাগলের গায়ে বস্তা দিয়েছি। কিন্তু হাস মুরগি নিয়ে কিছু করার নেই। মঙ্গলবারের শীতে বাড়ির ৩টি মুরগি মারা গেছে। একটি হাঁসের ব্যারাম ধরেছে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের উচ্চ আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, গত দুইদিন তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। বুধবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন ৭ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগের দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

Panchagarh-Cold-Wave

বুধবার সকালে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল গিয়ে দেখা গেছে, সর্দি, কাশি, ডায়েরিয়াসহ শীতজনিত নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে শতশত রোগী বহি:বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বৃদ্ধ ও শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। কনকনে শীতের কারণে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে প্রসূতি মা ও নবজাতক শিশুদের নিয়ে।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা তেঁতুলিয়া উপজেলার কালান্দিগঞ্জ এলাকার আব্দুল করিমের প্রসূতি স্ত্রী সেফালী বেগম বলেন, ২৬ দিন আগে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে জমজ তিন সন্তানের জন্ম হয়। পরে শীতজনিত কারণে সমস্যা দেখা দিলে তিন শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হই। বর্তমানে তারা আধুনিক সদর হাসপাতালের বিশেষ শিশু বিভাগে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে।

পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, টানা শৈত্যপ্রবাহের কারণে শিশু ও বৃদ্ধদের শীতজনিত নানান রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। বহি:বিভাগে শতশত রোগীকে চিকিৎসার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধ দেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের স্বল্পসংখ্যক চিকিৎসক নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সফিকুল আলম/এমএএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।