বৃহত্তম জামাতের জন্য প্রস্তুত শোলাকিয়া
অন্যান্য বছরের মতো এবারো ঈদ উল ফিতরের বৃহত্তম জামাত কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠত হতে যাচ্ছে। ঈদ জামাতকে ঘিরে এরই মধ্যে শেষ হয়েছে সকল প্রস্তুতি।
এবার শোলাকিয়ায় অনুষ্ঠিত হচ্ছেে ১৮৮তম ঈদ উল ফিতরের জামাত। সকাল ১০টায় জামাত শুরু হবে । ঈদের জামাতে ইমামতি করবেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের সভাপতি আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ। ঈদ জামাতকে ঘিরে এরই মধ্যে শেষ হয়েছে সকল প্রস্তুতি।
এবারের ঈদের জামাতে রাজনীতিক, উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তাসহ এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এ মাঠে নামাজ পড়বেন। দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে ঈদগাহ কমিটি দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা করেছেন।
ঐতিহ্যবাহী এ ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজে অংশ নিতে দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সকল এমপি, সচিবসহ বিশিষ্টজনদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে প্রশাসন। এবার শোলাকিয়ায় ৪ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
দেশ-বিদেশের লাখো মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করতে ছুটে আসেন কিশোরগঞ্জে। অনেকে কয়েক দশক ধরে একটানা এ মাঠে ঈদের জামায়াত আদায় করে আসছেন। দূরের মুসল্লিরা ঈদের কয়েকদিন আগেই কিশোরগঞ্জ চলে আসেন। অনেকে আত্মীয়-স্বজন ,আবাসিক হোটেল কিংবা শোলাকিয়ার খোলা মাঠে আগে থেকে অবস্থান নেন।
এ বছরে দূর থেকে আসা মুসল্লিদের যাতায়তের সুবিধার্থে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ রুটে দুটি বিশেষ ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ঈদের দিন সকাল ৬টায় ভৈরব থেকে এবং একই সময় ময়মনসিংহ থেকে ট্রেনগুলো শোলাকিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে। নামাজ শেষে বেলা ১২ টায় ভৈরব ও ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে ফিরে যাবে বিশেষ ট্রেন দু’টি।
শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক জি এস এম জাফরউল্লাহ জানান, শোলাকিয়া ঈদগাহের রীতি অনুযায়ি এ মাঠে ঈদের নামাজে অংশ নিতে দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধান মন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার,প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যসহ বাংলাদেশে অবস্থিত বিশ্বের মুসলিম দেশসমূহের কূটনীতিকদের আমন্ত্রন জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ঈদের নামাজের সকল প্রস্ততি শেষ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। গত বছর শোলাকিয়ায় সাড়ে ৩ লাখ মুসল্লির সমাগম হয়েছিল। এবারও দেশ বিদেশের ৪ লাখ মুসল্লি অংশ নিবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। ঈদের দিন র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করবে সাদা পোশাকের নিরাপত্তা বাহিনী। মাঠের প্রতিটি প্রবেশ পথে থাকছে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা। মাঠে প্রবেশের সময় মুসল্লিদের দেহ তল্লাশি করা হবে। পুরো শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন খান জানান, দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মানুষের আসা-যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে শোলাকিয়ার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। নামাজের আগে পুরো মাঠ সুইপিং করা হবে। থাকছে ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
তিনি আরো জানান, শহরে যাতে যানজট সৃষ্টি না হয় সে জন্য ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকবে। ঈদের দিন সকালে শহরে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
তিনি বলেন, মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদের নামাজ পড়ে নিরাপদে বাড়ি যেতে পারে সে জন্য সম্ভাব্য সকল ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
নূর মোহাম্মদ/এসকেডি/এমএস