বড়পীর জীবনাদর্শের পূর্ণ বাস্তবায়ন কাগতিয়া দরবার শরীফে

মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন
মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন , আমিরাত প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৭:০০ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭

চট্টগ্রাম কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মহান মোর্শেদ আওলাদে রাসূল হযরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ্ আহমদী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী বলেছেন, বড়পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রাঃ) কাদেরীয়া তরিক্বতের যে রুপরেখা রেখে গেছেন তা কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফে বিরাজমান।

আধ্যাত্মিক পদ্ধতিতে আত্মশুদ্ধিকরণ, তাওয়াজ্জুহ্ প্রদান, কুরআনের নূর বিতরণ, রুহানী পথ অতিক্রম, মোরাকাবা, জিকর ইত্যাদি রুহানী তালিমাত বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রাঃ) যেভাবে প্রদান করেছিলেন আজ থেকে ৮০০ বছর পূর্বে, তেমনি কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা খলিলুল্লাহ আওলাদে মোস্তফা খলিফায়ে রাসূল (দঃ) হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কাগতিয়া দরবার শরীফে চালু করেছেন সিনা-ব-সিনা তাওয়াজ্জুহ-ছবক প্রদান, ফয়েজে কোরআন প্রদান।

যার নূরানী ছোহবতে এসে হাজার হাজার যুবক নিজেদেরকে সংশোধন করেছেন, আত্মশুদ্ধি করেছেন, রাসূলুল্লাহ (দঃ) এর বাতেনী নূর বক্ষে ধারণ করেছেন। প্রিয় নবী (দঃ) এর সুন্নাত দরুদে মোস্তফা, গারে হেরার মোরাকাবা, শেষ রাতের তাহাজ্জুদ, হাতের অলংকার মিসওয়াক, মুখের অলংকার দাড়ি দিয়ে যুব সমাজ নিজেদের জীবনকে করেছে সুন্নাতময়। আল্লাহ তাআলা ও তার প্রিয় হাবীব (দঃ) এর ভালোবাসার জন্য এ দরবারের অনুসারীরা রাত-দিন কান্নাকাটি করে আল্লাহ তাআলার দরবারে। প্রিয়নবী (দঃ) এর ভালোবাসা লাভের আশায় প্রতিদিন বাদে নামাজে এশা চক্ষু বন্ধ অবস্থায় বসে থাকে জায়নামাজে, আর জিকর করতে থাকে ‌‘ছাল্লাল্লাহু আলাইকা এয়া মুহাম্মদু।’

শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের ৬৪তম পবিত্র ফাতেহা-এ এয়াজদাহুম শীর্ষক আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলে উপস্থিত ধর্মপ্রাণ মুসলমানের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ তকরির রাখছিলেন।

তিনি আরও বলেন, এ মহান মনীষী ফিতনার যুগেও আধ্যাত্মিক জগতে স্থাপন করেছেন বিরল দৃষ্টান্ত। ১৪০০ বছর পরে এসে খলিফায়ে রাসূল (দঃ) উপাধি লাভ করে নতুন ইতিহাস রচনা করেছেন তরিক্বত জগতে। আর পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার পর দেখালেন এক অলৌকিক লীলা। যা তার রওজা পাকে বিদ্যমান। তিনি সকলকে এ অলৌলিক লীলা স্বচক্ষে অবলোকন করার আহ্বান জানান।

মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ এর উদ্যোগে পবিত্র ফাতেহা-এ এয়াজদাহুম উপলক্ষে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল বাদে জোহর খতমে কোরআন, পবিত্র ফাতেহা-এ এয়াজদাহুম শীর্ষক আলোচনা সভা, বাদে আছর ফয়েজে কোরআনের মাধ্যমে নূরে কোরআন বিতরণ, বাদে মাগরিব রাসুল (দঃ) এর সুন্নাত তরিক্বায় নির্দিষ্ট ছবক প্রাপ্ত তরিক্বতপন্থীদেরকে বায়আত ও তাওয়াজ্জুহ্র মাধ্যমে রাসুল (দঃ) এর বাতেনী নূর বিতরণ এবং বাদে এশা মোর্শেদে আজমের তকরির, মিলাদ-ক্বিয়াম ও আখেরী মুনাজাত।

প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও এসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে দুপুর থেকেই দেশের দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান দরবার শরীফে আসতে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আছরের পূর্বেই মাহফিলস্থল দরবার শরীফস্থ গাউছুল আজম জামে মসজিদ প্রাঙ্গণসহ এর আশেপাশের এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে জনসমুদ্রে রূপ নেয়।

আলোচনা সভা ও মাহফিলে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের ওলামা পরিষদের সচিব মুফতি মুহাম্মদ ইব্রাহিম হানফি, উপাধ্যক্ষ আল্লামা মুহাম্মদ বদিউল আলম আহমদী, মুফতি কাজী মুহাম্মদ আনোয়ারুল আলম ছিদ্দিকি, আল্লামা মুহাম্মদ আশেকুর রহমান ও মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান নোমান প্রমুখ। প্রধান আলোচক ছিলেন সংগঠনের মহাসচিব অধ্যাপক মুহাম্মদ ফোরকান মিয়া।

মাহফিল শেষে হুজুর ক্বেবলা দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং দরবারের প্রতিষ্ঠাতা কাগতিয়ার গাউছুল আজমের আশু রোগমুক্তি ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।

এমআরএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।