বাজারে নতুন চাল এলেও দাম ঊর্ধ্বমুখী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৭:০১ এএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭

চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারে নতুন চাল আসলেও দাম ঊর্ধ্বমুখী। এবছর আমন ধানের ভালো উৎপাদন হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ দাবি করলেও কৃষকরা বলছেন অন্যকথা। ফলন খারাপ হওয়ায় এবং গ্রামের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ধান গুদামজাত করে রাখায় চালের দাম বেশি। আমদানি করা চালে বাজার কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও আমদানি বন্ধ হয়ে গেলে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার পলশা গ্রামের কৃষক আব্দুল করিম জানান, এবছর তিনি ৮ বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করেছিলেন। অন্যান্য বছর প্রতি বিঘায় ধান হয়েছিল প্রায় ১৮ মণ। কিন্তু এবছর প্রতি বিঘায় ধান হয়েছে ১২ থেকে ১৪ মণ। কার্তিক মাসে হালকা ঝড় হওয়ায় জমির ধান পড়ে যায়। সে কারণে ফলনও কম হয়। বর্তমানে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে এক হাজার টাকা মণ দরে। আশানুরূপ ফলন না হওয়ায় এবছর ধানের আবাদ করে লোকসান হবে।

তবে কৃষি বিভাগের দাবি, এবছর জেলায় ৫০ হাজার ৪৩০ হেক্টর জামিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ৩৫ হাজার ৪৮১ মেট্রিক টন। তবে জেলায় আমনের আবাদ হয়েছে ৪৮ হাজার ৯৪৮ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছে এক লাখ ৪২ হাজার ৪৩০ মেট্রিক টন চাল।

তারা বলছে, এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সময়মতো বৃষ্টিপাত হওয়ায় জেলায় আমনের ফলন ভালো হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের মডার্ন মার্কেটের খুচরা চাল ব্যবসায়ী জহরুল ইসলাম জানান, নতুন চাল বাজারে এলেও দামের উপর এর কোনো প্রভাব পড়েনি। বর্তমানে খুচরা বাজারে নতুন স্বর্ণা (মোটা) চাল ৪০ থেকে ৪২ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৫২ থেকে ৫৪ টাকা ও মিনিকেট ৫৮ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মডার্ন মার্কেট তহাবাজর সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বরেন্দ্র এলাকায় যে পরিমাণ আমন ধান উৎপাদন হয় তাতে করে দুই মাস চাউলের দাম বাড়ার কথা নয়। কিন্তু গ্রামের কিছু অসাধু ব্যাবসায়ী ধান কিনে গ্রামের বিভিন্ন স্থানে গুদামজাত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। সে কারণে নতুন ধান ওঠার পরও চালের বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি বরং দাম ঊর্ধ্বমুখী।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পাওয়ার হাউস মোড়ের পাইকারি চাল বিক্রয় মার্কেটের ব্যবসায়ী আবু সাঈদ জানান, নতুন চাল বাজারে আসার আগে যে দাম ছিল তার থেকে এখন কিছুটা বেড়েছে। বর্তমানে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা, চিকন স্বর্ণা ৩৭ থেকে ৩৮ টাকা, বিআর-২৮ ৫০ থেকে ৫১ টাকা ও জিরা শাইল ৫৩ টাকা কেজি দরে।

তিনি বলেন, দেশের বাইরে থেকে চাল আমদানির কারণে বাজার কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা মিল মালিক ও আতব ধান-চাল সমিতির সাধারণ সম্পাদক মসিউল করিম বাবু বলেন, আমনের ফলন খারাপ হওয়ায় চালের বাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। দেশের বাইরে থেকে চাল আমদানি হওয়ায় দাম স্থিতিশীল রয়েছে। চাল আমাদানি বন্ধ হয়ে গেলে স্থানীয় বাজারে চালের দাম বেড়ে গিয়ে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে। তাই এ মুহূর্তে চালের আমদানি স্বাভাবিক রাখতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

আব্দুল্লাহ/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।