ফরিদপুর শহর রক্ষা বাঁধে আবারো ধস : আতঙ্কে শহরবাসী
ফরিদপুরের পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতের কারণে শহর রক্ষা বাঁধে আবারো ধস দেখা দিয়েছে। শহরতলীর ধলার মোড় নামক স্থানে ৫০ মিটার জুড়ে সিসি ব্লক ধসে গেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে শহরবাসী। প্রমত্তা পদ্মার স্রোতের তোড়ে আবার ধসে পড়লো ফরিদপুর শহর রক্ষা বাঁধের একাংশ। শনিবার ভোরে শহরতলীর পর্যটন স্পট ধলার মোড় সংলগ্ন অংশে ৫০ মিটার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ মেরামতের নির্দেশ দিয়েছেন। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেও শহর রক্ষা বাঁধের সিএন্ডবি ঘাট এলাকায় ২০ মিটার ধসে যায়।
স্থানীয় আবুল হাসান মিন্টু ও দুলাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের জন্যই এই ভাঙন দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাদেকুজ্জামান মিলন পাল জানায়, রাতে জানতে পারি শহর রক্ষা বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে গেছে। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিষয়টি জানায়। এরপর শনিবার সকালে বোর্ডের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
স্থানীয় বৃদ্ধ মাজেদ মৃধা জানান, বাঁধটির কারণে গত ১০ বছর মোটামুটি নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলাম। কিন্তু এ বাঁধও যদি ভেঙে যায় তাহলে আমরা কোথায় যাবো?
ভাঙন আতঙ্কে পদ্মা পাড়ের এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এজন্য এলাকাবাসী দ্রুত ভাঙন মেরামতের করার দাবি জানিয়েছেন। দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে, পদ্মার গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে পাড়ে বসবাসরত পরিবারগুলো।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, আকস্মিক ভাঙনের কথা শুনে দ্রুতই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যে অংশটি ধসে গেছে সেখানে প্রায় দেড় হাজার জিও ব্যাগ এবং ৫০ বাই ৫০ সাইজের ব্লক দিয়ে ২/১ দিনের মধ্যে মেরামত করে ফেলা হবে।
বালু উত্তোলনের কারণে এ ভাঙন হয়েছে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বালু উত্তোলের কারণে একটি হয়নি। পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতের কারণে বাঁধের নিচ থেকে মাটি সড়ে গিয়ে এ ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেতে ২০১০ সালের শেষের দিকে ১৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে শহরতলী সিএন্ডবি ঘাট এলাকার ধলার মোড় থেকে হাজীগঞ্জ পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এরপর এ বছরের বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে শহর রক্ষা বাঁধের সিএন্ডবি ঘাট এলাকায় ২০ মিটার ধসে যায়।
এআরএ/আরআইপি